ভিয়েনা সম্মেলন থেকে জার্মানি ও ইতালির ঐক্য এবং শিল্পায়ন For SLST

ইউরোপের ইতিহাস MCQ কুইজ (সম্পূর্ণ ২০০ প্রশ্ন)

ভিয়েনা সম্মেলন (১৮১৫) ও মেটারনিখ ব্যবস্থা

প্রশ্ন ১: ভিয়েনা সম্মেলন কোন সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: C) ১৮১৫

বিস্তারিত: নেপোলিয়নের চূড়ান্ত পতনের পর ইউরোপের পুনর্গঠন এবং ভবিষ্যৎ শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য ইউরোপের প্রধান শক্তিগুলি অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় এই সম্মেলনে মিলিত হয়। এটি ১৮১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৮১৫ সালের জুন পর্যন্ত চলেছিল।

প্রশ্ন ২: ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তা বা সভাপতি কে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: B) অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর মেটারনিখ

বিস্তারিত: প্রিন্স ক্লেমেন্স ফন মেটারনিখ ছিলেন এই সম্মেলনের মূল চালিকাশক্তি। তার রক্ষণশীল নীতি এবং ইউরোপে শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্মেলনের সিদ্ধান্তকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। তাই ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ পর্যন্ত সময়কালকে ‘মেটারনিখ যুগ’ বলা হয়।

প্রশ্ন ৩: ভিয়েনা ব্যবস্থার মূলনীতি কোনটি ছিল না?

সঠিক উত্তর: A) জাতীয়তাবাদের প্রসার

বিস্তারিত: ভিয়েনা ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতীয়তাবাদী এবং বিপ্লবী ভাবনাকে দমন করা, প্রসার ঘটানো নয়। এর তিনটি মূল নীতি ছিল: ১) ন্যায্য অধিকার (Legitimacy), ২) ক্ষতিপূরণ (Compensation), এবং ৩) শক্তিসাম্য (Balance of Power)।

প্রশ্ন ৪: ‘মেটারনিখ ব্যবস্থা’ বলতে কী বোঝায়?

সঠিক উত্তর: D) ইউরোপে বিপ্লব-পূর্ব স্থিতাবস্থা বজায় রাখার রক্ষণশীল নীতি

বিস্তারিত: মেটারনিখ ব্যবস্থা ছিল ঘোর রক্ষণশীল এবং প্রতিক্রিয়াশীল। এর মূল লক্ষ্য ছিল ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ (স্বাধীনতা, সাম্য, মৈত্রী), জাতীয়তাবাদ ও উদারনীতিবাদকে দমন করে ইউরোপে পুরাতন রাজতন্ত্র ও অভিজাততন্ত্রকে টিকিয়ে রাখা।

প্রশ্ন ৫: ভিয়েনা সম্মেলনের পর ফ্রান্সে কোন राजवंशকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়?

সঠিক উত্তর: B) বুরবোঁ राजवंश

বিস্তারিত: ন্যায্য অধিকার নীতির ভিত্তিতে ফরাসি বিপ্লবের সময় ক্ষমতাচ্যুত বুরবোঁ राजवंशকে পুনরায় ফ্রান্সের সিংহাসনে বসানো হয়। অষ্টাদশ লুই রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।

প্রশ্ন ৬: ‘ইউরোপীয় শক্তি সমবায়’ (Concert of Europe) কী উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) ভিয়েনা ব্যবস্থার সিদ্ধান্তগুলি বজায় রাখা এবং বিদ্রোহ দমন করা

বিস্তারিত: এটি ছিল অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া এবং ব্রিটেনের (পরে ফ্রান্সও যোগ দেয়) মধ্যে একটি চুক্তি। এর মূল লক্ষ্য ছিল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান করা এবং ইউরোপের যেকোনো প্রান্তে বিপ্লবী আন্দোলন দেখা দিলে সম্মিলিতভাবে তা দমন করে স্থিতিশীলতা রক্ষা করা।

প্রশ্ন ৭: ভিয়েনা চুক্তির মাধ্যমে কোন দেশকে বিভক্ত করে বিভিন্ন শক্তির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: C) পোল্যান্ড

বিস্তারিত: জাতীয়তাবাদকে উপেক্ষা করে ভিয়েনা সম্মেলনে পোল্যান্ডকে পুনরায় রাশিয়া, প্রাশিয়া এবং অস্ট্রিয়ার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। এটি ছিল এই সম্মেলনের অন্যতম সমালোচিত একটি সিদ্ধান্ত।

প্রশ্ন ৮: ‘পবিত্র চুক্তি’ (Holy Alliance) -র প্রস্তাবক কে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: D) রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার

বিস্তারিত: রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার খ্রিস্টীয় নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে ইউরোপীয় শাসকদের মধ্যে একতা ও শান্তি বজায় রাখার জন্য এই ‘পবিত্র চুক্তি’-র প্রস্তাব করেন। যদিও মেটারনিখ একে ‘বাগাড়ম্বরপূর্ণ অর্থহীনতা’ বলে অভিহিত করেছিলেন, অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়া এতে স্বাক্ষর করে।

প্রশ্ন ৯: ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতির মূল কথা কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তী রাজবংশগুলিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা

বিস্তারিত: ন্যায্য অধিকার বা Legitimacy নীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল বিপ্লবের ফলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইউরোপের প্রাচীন ও ‘বৈধ’ রাজবংশগুলিকে তাদের সিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা।

প্রশ্ন ১০: ভিয়েনা ব্যবস্থার মাধ্যমে অস্ট্রিয়া উত্তর ইতালির কোন দুটি প্রদেশ লাভ করে?

সঠিক উত্তর: C) লোম্বার্ডি ও ভেনেশিয়া

বিস্তারিত: ক্ষতিপূরণ নীতির অংশ হিসেবে অস্ট্রিয়া উত্তর ইতালির দুটি সমৃদ্ধ প্রদেশ লোম্বার্ডি ও ভেনেশিয়ার উপর কর্তৃত্ব লাভ করে, যা পরবর্তীকালে ইতালির ঐক্যের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

প্রশ্ন ১১: ‘চতুঃশক্তি চুক্তি’ (Quadruple Alliance) -তে কোন চারটি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল?

সঠিক উত্তর: D) ব্রিটেন, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া

বিস্তারিত: ১৮১৫ সালের নভেম্বরে এই চারটি প্রধান বিজয়ী শক্তি নিজেদের মধ্যে চতুঃশক্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর মূল লক্ষ্য ছিল ফ্রান্সে বোনাপার্টদের পুনরাগমন রোধ করা এবং ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখা। ১৮১৮ সালে ফ্রান্সকে এতে অন্তর্ভুক্ত করে পঞ্চশক্তি চুক্তি গঠন করা হয়।

প্রশ্ন ১২: জার্মানির ক্ষেত্রে ভিয়েনা সম্মেলনের সিদ্ধান্ত কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) ৩৯টি রাজ্য নিয়ে একটি দুর্বল জার্মান কনফেডারেশন বা রাষ্ট্রসংঘ গঠন করা

বিস্তারিত: জাতীয়তাবাদকে দমন করার উদ্দেশ্যে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ না করে ৩৯টি রাজ্যের একটি শিথিল রাষ্ট্রসংঘ (German Confederation) গঠন করা হয়, যার সভাপতিত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় অস্ট্রিয়াকে।

প্রশ্ন ১৩: ‘কার্লসবাড ডিক্রি’ (Carlsbad Decrees) জারির উদ্দেশ্য কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) জার্মানিতে উদারনৈতিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমন করা

বিস্তারিত: ১৮১৯ সালে মেটারনিখের উদ্যোগে এই দমনমূলক আইনগুলি জারি করা হয়। এর মাধ্যমে জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সমিতি নিষিদ্ধ করা হয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হয় এবং উদারপন্থী অধ্যাপকদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রশ্ন ১৪: ভিয়েনা সম্মেলনের কোন সিদ্ধান্তটি ব্রিটেনের স্বার্থ রক্ষা করেছিল?

সঠিক উত্তর: D) মাল্টা, সিংহল, উত্তমাশা অন্তরীপের মতো গুরুত্বপূর্ণ নৌ-ঘাঁটি লাভ

বিস্তারিত: ব্রিটেন ইউরোপীয় ভূখণ্ডে নিজের প্রভাব বাড়ানোর চেয়ে বিশ্বজুড়ে তার বাণিজ্যিক ও নৌ-সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করতে বেশি আগ্রহী ছিল। তাই এই কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ নৌ-ঘাঁটিগুলি লাভ করা তার প্রধান স্বার্থ ছিল।

প্রশ্ন ১৫: মেটারনিখ যুগের সময়কাল কোনটি?

সঠিক উত্তর: C) ১৮১৫-১৮৪৮

বিস্তারিত: ভিয়েনা সম্মেলনের পর থেকে ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবে তার পতন পর্যন্ত সময়কালকে ইউরোপের ইতিহাসে ‘মেটারনিখ যুগ’ বলা হয়, কারণ এই সময়ে তিনি ইউরোপীয় রাজনীতিতে রক্ষণশীল নীতির প্রধান ধারক ও বাহক ছিলেন।

জাতীয়তাবাদ, উদারনীতিবাদ এবং সমাজতন্ত্রবাদ

প্রশ্ন ১৬: ‘জাতীয়তাবাদ’ বলতে মূলত কী বোঝায়?

সঠিক উত্তর: A) ভাষা, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের ভিত্তিতে একটি জাতির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেতনা

বিস্তারিত: জাতীয়তাবাদ হল একটি ভাবাদর্শ যা একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক বা জাতিগত ঐক্যের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে এবং তাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের জন্য অনুপ্রাণিত করে।

প্রশ্ন ১৭: উনিশ শতকের ‘উদারনীতিবাদ’ (Liberalism) -এর মূল ভিত্তি কী ছিল?

সঠিক উত্তর: C) ব্যক্তির স্বাধীনতা, সাংবিধানিক সরকার এবং অবাধ বাণিজ্য

বিস্তারিত: উনিশ শতকের উদারনীতিবাদীরা ছিলেন মূলত মধ্যবিত্ত বুর্জোয়া শ্রেণি। তারা স্বৈরাচারী শাসনের বিরোধিতা করে নিয়মতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সরকার, আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবাধ নীতির (Laissez-faire) সমর্থক ছিলেন।

প্রশ্ন ১৮: ‘কাল্পনিক সমাজতন্ত্র’ (Utopian Socialism) -এর প্রবক্তা কারা ছিলেন?

সঠিক উত্তর: B) সাঁ সিমো, শার্ল ফুরিয়ে, রবার্ট আওয়েন

বিস্তারিত: এই চিন্তাবিদরা শিল্পায়নের ফলে সৃষ্ট সামাজিক বৈষম্য ও শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তারা রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ বা বিপ্লবের পরিবর্তে আদর্শ সমবায় সমাজ গঠনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের স্বপ্ন দেখতেন। তাদের ভাবনা বাস্তবসম্মত পথ দেখাতে না পারায় মার্কসবাদীরা একে ‘কাল্পনিক’ বলে আখ্যা দেন।

প্রশ্ন ১৯: ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ বা মার্কসবাদের জনক কাদের বলা হয়?

সঠিক উত্তর: D) কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলস

বিস্তারিত: কার্ল মার্কস ও এঙ্গেলস তাদের ‘কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’ (১৮৪৮) এবং ‘ডাস ক্যাপিটাল’ গ্রন্থে ইতিহাসের বস্তুবাদী ব্যাখ্যা, শ্রেণি সংগ্রাম, উদ্বৃত্ত মূল্য তত্ত্ব এবং সর্বহারার একনায়কতন্ত্রের ধারণার মাধ্যমে সমাজতন্ত্রের একটি বৈজ্ঞানিক ও বিপ্লবী রূপরেখা প্রদান করেন।

প্রশ্ন ২০: “The Communist Manifesto” কত সালে প্রকাশিত হয়?

সঠিক উত্তর: A) ১৮৪৮

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলস রচিত এই ই маниফেস্টোটি প্রকাশিত হয়। এটি “দুনিয়ার মজদুর, এক হও!” স্লোগানের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শ্রমিক আন্দোলনকে এক নতুন পথের দিশা দেখায়।

প্রশ্ন ২১: মার্কসীয় তত্ত্বে ‘শ্রেণি সংগ্রাম’ (Class Struggle) কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়?

সঠিক উত্তর: B) বুর্জোয়া (মালিক শ্রেণি) ও প্রলেতারিয়েত (শ্রমিক শ্রেণি)

বিস্তারিত: মার্কসের মতে, মানব সমাজের ইতিহাস হল শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস। পুঁজিবাদী সমাজে উৎপাদনের উপকরণের মালিক বুর্জোয়া শ্রেণি এবং শ্রম বিক্রি করা প্রলেতারিয়েত বা শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে স্বার্থের সংঘাত অনিবার্য এবং এই সংগ্রামই সমাজ পরিবর্তনের চালিকাশক্তি।

প্রশ্ন ২২: “সম্পত্তি হল চৌর্যবৃত্তি” (“Property is theft”) – এই বিখ্যাত উক্তিটি কার?

সঠিক উত্তর: C) পিয়ের-জোসেফ প্রুধোঁ

বিস্তারিত: ফরাসি চিন্তাবিদ পিয়ের-জোসেফ প্রুধোঁ ছিলেন নৈরাজ্যবাদের (Anarchism) অন্যতম প্রবক্তা। তিনি তার ‘What is Property?’ (১৮৪০) গ্রন্থে এই বিখ্যাত উক্তিটি করেন। তিনি রাষ্ট্র ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি উভয়েরই বিরোধী ছিলেন।

প্রশ্ন ২৩: কোন মতাদর্শটি জাতি-রাষ্ট্রের (Nation-State) ধারণার জন্ম দেয়?

সঠিক উত্তর: A) জাতীয়তাবাদ

বিস্তারিত: জাতীয়তাবাদের মূল লক্ষ্য হল একই ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মানুষদের জন্য একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করা। এই ধারণা থেকেই জাতি-রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়, যেখানে একটি জাতি একটি রাষ্ট্রে বাস করে।

প্রশ্ন ২৪: উদারনীতিবাদের অর্থনৈতিক রূপ কী নামে পরিচিত?

সঠিক উত্তর: D) লেসে-ফেয়ার বা অবাধ বাণিজ্য নীতি

বিস্তারিত: অ্যাডাম স্মিথের ‘ওয়েলথ অফ নেশনস’ গ্রন্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উদারনীতিবাদীরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেন। তাদের মতে, চাহিদা ও জোগানের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী অবাধে বাণিজ্য চললে সকলেরই মঙ্গল হবে। এই নীতি ‘লেসে-ফেয়ার’ (Laissez-faire) নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ২৫: ‘নিউ ল্যানার্ক’ নামক আদর্শ শিল্প শহরটি কে প্রতিষ্ঠা করেন?

সঠিক উত্তর: B) রবার্ট আওয়েন

বিস্তারিত: ব্রিটিশ শিল্পপতি ও কাল্পনিক সমাজতন্ত্রী রবার্ট আওয়েন স্কটল্যান্ডের নিউ ল্যানার্কে তার নিজের কারখানায় শ্রমিকদের জন্য উন্নত বাসস্থান, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, শিশুশ্রম বন্ধ এবং শিক্ষার ব্যবস্থা করে একটি আদর্শ সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন।

১৮৩০ ও ১৮৪৮-এর বিপ্লব

প্রশ্ন ২৬: ১৮৩০ সালের জুলাই বিপ্লব কোন দেশে সংঘটিত হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: C) ফ্রান্স

বিস্তারিত: ফ্রান্সের স্বৈরাচারী বুরবোঁ রাজা দশম চার্লসের প্রতিক্রিয়াশীল নীতির বিরুদ্ধে প্যারিসের জনগণ এই বিপ্লব সংঘটিত করে। এর ফলে দশম চার্লস ক্ষমতাচ্যুত হন।

প্রশ্ন ২৭: জুলাই বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে কে ক্ষমতায় আসেন?

সঠিক উত্তর: A) লুই ফিলিপ

বিস্তারিত: জুলাই বিপ্লবের পর অর্লিয়েন্স বংশের লুই ফিলিপ ‘ফরাসিদের রাজা’ (King of the French) উপাধি নিয়ে ক্ষমতায় বসেন। তাকে ‘নাগরিক রাজা’ বা ‘বুর্জোয়া রাজা’ বলা হত কারণ তার শাসন মূলত ধনিক বুর্জোয়া শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করত।

প্রশ্ন ২৮: জুলাই বিপ্লবের প্রভাবে কোন দেশ হল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা লাভ করে?

সঠিক উত্তর: B) বেলজিয়াম

বিস্তারিত: ভিয়েনা সম্মেলনে বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। ফরাসি জুলাই বিপ্লবের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বেলজিয়ামের জনগণ বিদ্রোহ করে এবং ১৮৩০ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে, যা পরে ইউরোপীয় শক্তিরা স্বীকৃতি দেয়।

প্রশ্ন ২৯: ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল কোথায় ছিল?

সঠিক উত্তর: D) প্যারিস

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের বিপ্লব, যা ‘জাতিসমূহের বসন্ত’ (Springtime of the Peoples) নামেও পরিচিত, তার সূচনা হয়েছিল ফ্রান্সের প্যারিসে। লুই ফিলিপের শাসনের বিরুদ্ধে এই বিপ্লবের ফলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ফ্রান্সে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র স্থাপিত হয়।

প্রশ্ন ৩০: “যখন ফ্রান্স হাঁচি দেয়, তখন সমগ্র ইউরোপের ঠান্ডা লাগে” – উক্তিটি কার?

সঠিক উত্তর: A) মেটারনিখ

বিস্তারিত: অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর মেটারনিখ এই বিখ্যাত উক্তিটি করেছিলেন। এর দ্বারা তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, ফ্রান্সের রাজনৈতিক ঘটনা, বিশেষ করে বিপ্লবী আন্দোলন, খুব দ্রুত সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রভাব বিস্তার করে। ১৮৩০ ও ১৮৪৮ সালের বিপ্লব তার এই উক্তির সত্যতা প্রমাণ করে।

প্রশ্ন ৩১: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের ফলে কোন বিখ্যাত রক্ষণশীল রাষ্ট্রনেতার পতন ঘটে?

সঠিক উত্তর: B) মেটারনিখ

বিস্তারিত: প্যারিসের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ঢেউ যখন অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় পৌঁছায়, তখন ছাত্র-জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে মেটারনিখ পদত্যাগ করে ইংল্যান্ডে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তার পতনের সাথে সাথে ‘মেটারনিখ যুগ’-এর অবসান ঘটে।

প্রশ্ন ৩২: ১৮৪৮-এর ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর ফ্রান্সে কে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন?

সঠিক উত্তর: C) লুই নেপোলিয়ন বোনাপার্ট

বিস্তারিত: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের ভাইপো লুই নেপোলিয়ন বিপুল ভোটে জয়ী হন। পরে ১৮৫২ সালে তিনি এক গণভোটের মাধ্যমে নিজেকে ‘সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন’ হিসেবে ঘোষণা করেন এবং দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রশ্ন ৩৩: ১৮৩০ সালের জুলাই বিপ্লবের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) দশম চার্লসের ‘জুলাই অর্ডিন্যান্স’ জারি

বিস্তারিত: রাজা দশম চার্লস চারটি স্বৈরাচারী অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স জারি করেন, যার মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, নবনির্বাচিত আইনসভা ভেঙে দেওয়া, এবং ভোটাধিকার সংকুচিত করা হয়। এই ঘটনাই জুলাই বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

প্রশ্ন ৩৪: ১৮৪৮ সালের ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট’ -এর মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) একটি ঐক্যবদ্ধ ও উদারনৈতিক জার্মানি গঠন করা

বিস্তারিত: জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে মিলিত হয়ে সমগ্র জার্মানির জন্য একটি সংবিধান রচনার চেষ্টা করেন। তাদের লক্ষ্য ছিল অস্ট্রিয়াকে বাদ দিয়ে প্রাশিয়ার রাজার নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক জার্মানি গঠন করা।

প্রশ্ন ৩৫: ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট কেন ব্যর্থ হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: B) প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিক উইলিয়াম ‘নর্দমার মুকুট’ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোয়

বিস্তারিত: পার্লামেন্ট প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিক উইলিয়ামকে объединен জার্মানির সম্রাট হওয়ার প্রস্তাব দিলে, তিনি জনগণের দেওয়া এই মুকুটকে ‘a crown from the gutter’ (নর্দমা থেকে তোলা মুকুট) বলে প্রত্যাখ্যান করেন। তার এই অস্বীকৃতি পার্লামেন্টের ব্যর্থতার প্রধান কারণ।

প্রশ্ন ৩৬: হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতা কে ছিলেন, যিনি ১৮৪৮ সালে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন?

সঠিক উত্তর: C) লুই কসুথ

বিস্তারিত: লুই কসুথ বা লায়োস কসুথ ছিলেন একজন প্রখর হাঙ্গেরীয় জাতীয়তাবাদী নেতা। তিনি অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে হাঙ্গেরির স্বাধীনতার জন্য ১৮৪৮-৪৯ সালে একটি ব্যাপক বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন, যা অবশেষে রাশিয়ার সহায়তায় অস্ট্রিয়া দমন করে।

প্রশ্ন ৩৭: ফ্রান্সের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের ‘জাতীয় কারখানা’ (National Workshops) স্থাপনের উদ্দেশ্য কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান করা

বিস্তারিত: সমাজতন্ত্রী নেতা লুই ব্লাঁর প্রভাবে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর প্যারিসের বিশাল বেকার শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার জন্য এই জাতীয় কারখানাগুলি স্থাপন করা হয়েছিল। তবে এটি অর্থনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয় এবং বন্ধ করে দেওয়া হলে ‘জুন মাসের বিদ্রোহ’ (June Days Uprising) শুরু হয়।

প্রশ্ন ৩৮: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবকে ‘বুদ্ধিজীবীদের বিপ্লব’ (Revolution of the Intellectuals) বলা হয় কেন?

সঠিক উত্তর: A) কারণ অধ্যাপক, আইনজীবী, ছাত্ররা এই বিপ্লবে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল

বিস্তারিত: বিশেষ করে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ায়, ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিল মধ্যবিত্ত শ্রেণির বুদ্ধিজীবীরা। ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্টের অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন অধ্যাপক বা আইনজীবী। তবে তাদের বাস্তব রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার অভাব বিপ্লবের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ছিল।

প্রশ্ন ৩৯: ১৮২১ সালে শুরু হওয়া কোন দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ১৮৩০ সালের দিকে ইউরোপীয় শক্তিদের হস্তক্ষেপে সফলতা লাভ করে?

সঠিক উত্তর: C) গ্রিস

বিস্তারিত: গ্রিস অটোমান তুর্কি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করে। ইউরোপের জনমত এবং ব্রিটেন, ফ্রান্স ও রাশিয়ার সামরিক সহায়তায় অবশেষে ১৮৩২ সালের লন্ডন চুক্তির মাধ্যমে গ্রিস একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

প্রশ্ন ৪০: লুই ফিলিপের শাসনকে ‘বুর্জোয়া রাজতন্ত্র’ বলা হয় কেন?

সঠিক উত্তর: D) কারণ তার নীতিগুলি মূলত ধনিক-বণিক বা বুর্জোয়া শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করত

বিস্তারিত: লুই ফিলিপের শাসনামলে ভোটাধিকার শুধুমাত্র উচ্চ কর প্রদানকারী সম্পত্তিমান বুর্জোয়াদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নীতিগুলি শিল্পপতি, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই প্রণীত হত, যা সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকদের থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল।

জার্মানি ও ইতালির ঐক্য

প্রশ্ন ৪১: ইতালির ঐক্য আন্দোলনের ‘মস্তিষ্ক’ (The Brain) কাকে বলা হয়?

সঠিক উত্তর: B) কাভুর

বিস্তারিত: কাউন্ট ক্যামিলো বেনসো ডি কাভুর ছিলেন পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তার বাস্তববাদী কূটনীতি, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং বৈদেশিক শক্তির (বিশেষ করে ফ্রান্স) সাহায্য নিয়ে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করার পরিকল্পনা ইতালির ঐক্যকে সম্ভব করে তুলেছিল। তাই তাকে ঐক্যের ‘মস্তিষ্ক’ বলা হয়।

প্রশ্ন ৪২: ‘তরুণ ইতালি’ (Young Italy) নামক গুপ্ত সমিতির প্রতিষ্ঠাতা কে?

সঠিক উত্তর: C) জোসেফ ম্যাৎসিনি

বিস্তারিত: ম্যাৎসিনি ছিলেন ইতালির ঐক্য আন্দোলনের ‘আত্মা’ বা ‘প্রবক্তা’ (The Soul/Prophet)। তিনি ইতালির যুবকদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগিয়ে তোলার জন্য ১৮৩১ সালে ‘তরুণ ইতালি’ প্রতিষ্ঠা করেন। তার আদর্শ ছিল “ঈশ্বর, জনগণ এবং ইতালি”।

প্রশ্ন ৪৩: গ্যারিবল্ডির ‘লাল কোর্তা’ বাহিনী (Red Shirts) কোন অঞ্চল দখল করে পিডমন্টের রাজার হাতে তুলে দেয়?

সঠিক উত্তর: A) সিসিলি ও নেপলস

বিস্তারিত: জিউসেপ্পে গ্যারিবল্ডি, যিনি ঐক্য আন্দোলনের ‘তরবারি’ (The Sword) নামে পরিচিত, তার হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ‘লাল কোর্তা’ বাহিনী নিয়ে দক্ষিণ ইতালির সিসিলি ও নেপলস রাজ্যদুটি দখল করেন এবং নিঃস্বার্থভাবে তা পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার রাজা দ্বিতীয় ভিক্টর এমানুয়েলের হাতে তুলে দেন।

প্রশ্ন ৪৪: জার্মানির ঐক্যের প্রধান স্থপতি কে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: D) অটো ফন বিসমার্ক

বিস্তারিত: প্রাশিয়ার চ্যান্সেলর অটো ফন বিসমার্ক ছিলেন জার্মান ঐক্যের প্রধান রূপকার। তিনি তার বিখ্যাত ‘রক্ত ও লৌহ’ (Blood and Iron) নীতির মাধ্যমে কূটনীতি ও যুদ্ধের সাহায্যে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন।

প্রশ্ন ৪৫: বিসমার্কের ‘রক্ত ও লৌহ’ নীতি বলতে কী বোঝায়?

সঠিক উত্তর: C) সামরিক শক্তি ও যুদ্ধের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্য সাধন

বিস্তারিত: বিসমার্ক বিশ্বাস করতেন যে, বক্তৃতা বা সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্ত দিয়ে নয়, একমাত্র ‘লৌহ ও রক্তের’ (অর্থাৎ যুদ্ধ ও সামরিক শক্তির) দ্বারাই জার্মানির ঐক্য অর্জন সম্ভব। এই নীতি প্রয়োগ করে তিনি তিনটি যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন।

প্রশ্ন ৪৬: ‘জোলভেরাইন’ (Zollverein) কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) একটি জার্মান শুল্ক সংঘ

বিস্তারিত: ১৮৩৪ সালে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে গঠিত এই শুল্ক সংঘ জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যগুলির মধ্যে অভ্যন্তরীণ শুল্ক বাধা দূর করে অবাধ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠা করে। এটি অর্থনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐক্যের পথ প্রশস্ত করেছিল।

প্রশ্ন ৪৭: কোন যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়?

সঠিক উত্তর: D) ফ্রান্সের সাথে সেডানের যুদ্ধ (১৮৭০)

বিস্তারিত: ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের নির্ণায়ক যুদ্ধ ছিল সেডানের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন পরাজিত ও বন্দী হন। এর ফলে দক্ষিণ জার্মানির রাজ্যগুলি প্রাশিয়ার সাথে যোগ দেয় এবং জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়। ১৮৭১ সালের জানুয়ারিতে ভার্সাই প্রাসাদে প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়ামকে объединен জার্মানির সম্রাট ঘোষণা করা হয়।

প্রশ্ন ৪৮: ঐক্যবদ্ধ ইতালির প্রথম রাজা কে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: B) দ্বিতীয় ভিক্টর এমানুয়েল

বিস্তারিত: পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার রাজা দ্বিতীয় ভিক্টর এমানুয়েলকে ১৮৬১ সালে ঐক্যবদ্ধ ইতালির প্রথম রাজা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তার নেতৃত্বেই কাভুর, ম্যাৎসিনি ও গ্যারিবল্ডির প্রচেষ্টা একটি সফল পরিণতি লাভ করে।

প্রশ্ন ৪৯: ইতালির ঐক্য আন্দোলনে কোন রাজ্য নেতৃত্ব দিয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া

বিস্তারিত: ইতালির একমাত্র রাজ্য পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া ছিল অস্ট্রিয়ার প্রভাবমুক্ত এবং এর রাজা ভিক্টর এমানুয়েল ও প্রধানমন্ত্রী কাভুরের নেতৃত্বে ইতালির ঐক্য আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল।

প্রশ্ন ৫০: স্যাডোয়ার যুদ্ধ (১৮৬৬) কাদের মধ্যে হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: C) প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়া

বিস্তারিত: জার্মান রাজ্যগুলির উপর থেকে অস্ট্রিয়ার প্রভাব দূর করার জন্য বিসমার্ক এই যুদ্ধের পরিকল্পনা করেন। স্যাডোয়ার যুদ্ধে প্রাশিয়ার নির্ণায়ক জয় জার্মান কনফেডারেশন ভেঙে দেয় এবং অস্ট্রিয়াকে জার্মানির রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করে।

প্রশ্ন ৫১: ‘রিসর্জিমেন্টো’ (Risorgimento) কথাটির অর্থ কী?

সঠিক উত্তর: D) পুনর্জাগরণ বা নবজাগরণ

বিস্তারিত: ইতালির ঐক্য আন্দোলনকে ‘রিসর্জিমেন্টো’ বলা হয়। এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না, এটি ছিল ইতালির সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক এবং জাতীয় চেতনার এক নবজাগরণ।

প্রশ্ন ৫২: ‘কার্বোনারি’ কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) ইতালির একটি গুপ্ত বিপ্লবী সমিতি

বিস্তারিত: কার্বোনারি ছিল ১৯ শতকের প্রথম দিকে ইতালিতে সক্রিয় একটি গুপ্ত সমিতি। এর সদস্যরা ছিলেন মূলত উদারপন্থী ও জাতীয়তাবাদী, যারা ইতালিতে বিদেশি শাসন, বিশেষ করে অস্ট্রিয়ার আধিপত্যের অবসান ঘটাতে চেয়েছিল। ম্যাৎসিনি নিজেও প্রথম জীবনে কার্বোনারির সদস্য ছিলেন।

প্রশ্ন ৫৩: এমস টেলিগ্রাম (Ems Dispatch) কোন যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ ছিল?

সঠিক উত্তর: B) ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়ান যুদ্ধ

বিস্তারিত: স্পেনের সিংহাসন নিয়ে প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়াম ও ফরাসি দূতের মধ্যে আলোচনা সংক্রান্ত একটি টেলিগ্রামকে বিসমার্ক চতুরতার সাথে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন। এই সম্পাদিত টেলিগ্রামটি উভয় দেশেই তীব্র জাতীয়তাবাদী আবেগের সৃষ্টি করে এবং ফ্রান্স প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।

প্রশ্ন ৫৪: ঐক্যবদ্ধ জার্মানির প্রথম সম্রাট কে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: D) প্রথম উইলিয়াম

বিস্তারিত: ১৮৭১ সালের ১৮ জানুয়ারি ফ্রান্সের ভার্সাই প্রাসাদের ‘মিরর হলে’ প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়ামকে ঐক্যবদ্ধ জার্মান সাম্রাজ্যের ‘কাইজার’ বা সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

প্রশ্ন ৫৫: কোন চুক্তির মাধ্যমে কাভুর ইতালির ঐক্যের জন্য তৃতীয় নেপোলিয়নের সাহায্য নিশ্চিত করেন?

সঠিক উত্তর: C) প্লোমবিয়ার্সের চুক্তি

বিস্তারিত: ১৮৫৮ সালে কাভুর ও ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের মধ্যে এই গোপন চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, পিডমন্ট যদি অস্ট্রিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়, তবে ফ্রান্স তাকে সামরিক সাহায্য করবে এবং এর বিনিময়ে ফ্রান্স নিস ও স্যাভয় পাবে।

ইংল্যান্ড ও ইউরোপে শিল্পায়ন

প্রশ্ন ৫৬: শিল্প বিপ্লব প্রথম কোন দেশে শুরু হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) ইংল্যান্ড

বিস্তারিত: অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ডে প্রথম শিল্প বিপ্লবের সূচনা হয়। এর পেছনে ছিল অনুকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ঔপনিবেশিক বাজার, কাঁচামালের জোগান, মূলধনের প্রাচুর্য এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মতো একাধিক কারণ।

প্রশ্ন ৫৭: ‘ফ্লাইং শাটল’ কে আবিষ্কার করেন?

সঠিক উত্তর: C) জন কে

বিস্তারিত: ১৭৩৩ সালে জন কে ‘উড়ন্ত মাকু’ বা ‘ফ্লাইং শাটল’ আবিষ্কার করেন, যা বস্ত্রশিল্পে বুননের গতিকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় এবং সুতোর চাহিদা বৃদ্ধি করে। এটি ছিল বস্ত্রশিল্পে বিপ্লবের প্রথম ধাপ।

প্রশ্ন ৫৮: বাষ্পীয় ইঞ্জিন কে আবিষ্কার করেন?

সঠিক উত্তর: B) জেমস ওয়াট

বিস্তারিত: যদিও টমাস নিউকোমেন প্রথম কার্যকরী বাষ্পীয় ইঞ্জিন তৈরি করেন, জেমস ওয়াট ১৭৬৯ সালে এটিকে ব্যাপকভাবে উন্নত করেন। তার改良িত বাষ্পীয় ইঞ্জিন শিল্প বিপ্লবের চালিকাশক্তিতে পরিণত হয় এবং কারখানা ও পরিবহনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসে।

প্রশ্ন ৫৯: শিল্পায়নের ফলে সমাজে কোন নতুন দুটি শ্রেণির উদ্ভব হয়?

সঠিক উত্তর: D) শিল্পপতি বুর্জোয়া ও শ্রমিক বা সর্বহারা

বিস্তারিত: শিল্পায়নের ফলে উৎপাদন ব্যবস্থার মালিক, অর্থাৎ কারখানার মালিক, পুঁজিপতি বা বুর্জোয়া শ্রেণির উদ্ভব হয়। অন্যদিকে, যারা কারখানায় মজুরির বিনিময়ে শ্রম বিক্রি করত, সেই বিশাল শ্রমিক বা প্রলেতারিয়েত (সর্বহারা) শ্রেণির জন্ম হয়। এই দুই শ্রেণির স্বার্থের সংঘাত পরবর্তীকালের ইতিহাসের মূল চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে।

প্রশ্ন ৬০: ‘সেফটি ল্যাম্প’ বা নিরাপত্তা বাতি কে আবিষ্কার করেন?

সঠিক উত্তর: A) হামফ্রে ডেভি

বিস্তারিত: ১৮১৫ সালে স্যার হামফ্রে ডেভি খনি শ্রমিকদের জন্য ‘সেফটি ল্যাম্প’ আবিষ্কার করেন। এই বাতি খনির ভেতরে দাহ্য গ্যাস (মিথেন) থাকা সত্ত্বেও বিস্ফোরণ ঘটাত না, ফলে খনিতে কাজ অনেক নিরাপদ হয়ে ওঠে এবং কয়লা উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্ন ৬১: প্রথম সফল বাষ্পীয় রেলইঞ্জিন ‘দ্য রকেট’ কে তৈরি করেন?

সঠিক উত্তর: C) জর্জ স্টিফেনসন

বিস্তারিত: জর্জ স্টিফেনসনকে ‘রেলপথের জনক’ বলা হয়। ১৮২৯ সালে তার নির্মিত ‘রকেট’ নামক বাষ্পীয় ইঞ্জিনটি লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার রেলওয়ে প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়। এটিই ছিল যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য প্রথম সফল ও কার্যকরী রেলইঞ্জিন, যা যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব নিয়ে আসে।

প্রশ্ন ৬২: ‘স্পিনিং জেনি’ কে আবিষ্কার করেন?

সঠিক উত্তর: A) জেমস হারগ্রিভস

বিস্তারিত: ১৭৬৪ সালে জেমস হারগ্রিভস ‘স্পিনিং জেনি’ আবিষ্কার করেন। এই যন্ত্রটি একসঙ্গে একাধিক সুতো কাটতে পারত, যা বস্ত্রশিল্পে উৎপাদন বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

প্রশ্ন ৬৩: শিল্প বিপ্লবের সময় ‘এনক্লোজার মুভমেন্ট’ বলতে কী বোঝানো হয়?

সঠিক উত্তর: B) যৌথ বা ব্যক্তিগত জমিগুলি বেড়া দিয়ে ঘিরে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করা

বিস্তারিত: ইংল্যান্ডে বড় বড় জমিদাররা আইন করে গ্রামের সাধারণের ব্যবহারের জমি (common land) এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের জমিগুলিকেও বেড়া দিয়ে ঘিরে নিজেদের খামারের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। এর ফলে বহু কৃষক ভূমিহীন হয়ে কারখানার শ্রমিক হতে শহরে চলে আসতে বাধ্য হয়।

প্রশ্ন ৬৪: ‘লাডাইট’ (Luddite) কাদের বলা হত?

সঠিক উত্তর: D) যন্ত্রের ব্যবহারে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের, যারা যন্ত্র ভাঙচুর করত

বিস্তারিত: ১৯ শতকের প্রথম দিকে ইংল্যান্ডের বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকরা মনে করত যে নতুন যন্ত্রের কারণেই তাদের চাকরি চলে যাচ্ছে। তাই তারা কাল্পনিক নেতা নেড লাডের নামে সংগঠিত হয়ে কারখানা আক্রমণ করে যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করত। এই আন্দোলন ‘লাডাইট মুভমেন্ট’ নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ৬৫: শিল্প বিপ্লবের পর মহাদেশীয় ইউরোপে প্রথম কোন দেশ শিল্পায়িত হয়?

সঠিক উত্তর: C) বেলজিয়াম

বিস্তারিত: কয়লা ও লোহার ভান্ডার, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ব্রিটিশ প্রযুক্তি ও মূলধনের সহজলভ্যতার কারণে ইংল্যান্ডের পর মহাদেশীয় ইউরোপে বেলজিয়ামই প্রথম সফলভাবে শিল্পায়িত হতে পেরেছিল।

মিশ্র ও বিস্তারিত প্রশ্নাবলী (সকল অধ্যায়)

প্রশ্ন ৬৬: কোন ঐতিহাসিক প্রথম ‘শিল্প বিপ্লব’ কথাটি জনপ্রিয় করেন?

সঠিক উত্তর: A) আর্নল্ড টয়েনবি

বিস্তারিত: যদিও কথাটি আগেও ব্যবহৃত হয়েছে, ব্রিটিশ অর্থনৈতিক ঐতিহাসিক আর্নল্ড টয়েনবি তার “Lectures on the Industrial Revolution in England” (১৮৮৪) বইয়ের মাধ্যমে ‘Industrial Revolution’ বা ‘শিল্প বিপ্লব’ পরিভাষাটিকে জনপ্রিয় ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন।

প্রশ্ন ৬৭: সেডানের যুদ্ধে ফ্রান্সের কোন সম্রাট পরাজিত ও বন্দী হন?

সঠিক উত্তর: C) তৃতীয় নেপোলিয়ন

বিস্তারিত: ১৮৭০ সালের ২ সেপ্টেম্বর ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়ান যুদ্ধের সময় সেডানের যুদ্ধে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন (লুই নেপোলিয়ন বোনাপার্ট) তার বিশাল সেনাবাহিনীসহ প্রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এই ঘটনা ফ্রান্সে দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটায়।

প্রশ্ন ৬৮: ইতালির কোন অংশটি সবচেয়ে শেষে ঐক্যবদ্ধ ইতালির সঙ্গে যুক্ত হয়?

সঠিক উত্তর: B) রোম

বিস্তারিত: পোপের শাসনাধীন রোম ফরাসি সৈন্যদের দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। ১৮৭০ সালে ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়ান যুদ্ধ শুরু হলে ফ্রান্স রোম থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। এই সুযোগে ইতালীয় বাহিনী রোম দখল করে এবং এটিকে ঐক্যবদ্ধ ইতালির রাজধানী ঘোষণা করা হয়।

প্রশ্ন ৬৯: ‘ওয়াটার ফ্রেম’ নামক যন্ত্রের আবিষ্কারক কে?

সঠিক উত্তর: D) রিচার্ড আর্করাইট

বিস্তারিত: রিচার্ড আর্করাইট ১৭৬৯ সালে ‘ওয়াটার ফ্রেম’ আবিষ্কার করেন। এটি জলশক্তি দ্বারা চালিত হতো এবং স্পিনিং জেনির চেয়েও শক্ত ও মোটা সুতা তৈরি করতে পারত। এই যন্ত্র কারখানা ব্যবস্থার (Factory System) সূচনা করে।

প্রশ্ন ৭০: ১৮৪৮ সালে পোপের রাজ্য থেকে পোপ পালিয়ে গেলে কে সেখানে এক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন?

সঠিক উত্তর: A) ম্যাৎসিনি

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের সময় রোমে বিদ্রোহ দেখা দিলে পোপ নবম পায়াস পালিয়ে যান। এই সুযোগে ম্যাৎসিনি রোমে একটি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার অন্যতম নেতা হন। যদিও এই প্রজাতন্ত্র বেশিদিন টেকেনি এবং ফরাসি হস্তক্ষেপে এর পতন ঘটে।

প্রশ্ন ৭১: বিসমার্ক জার্মানির ঐক্যের জন্য মোট কয়টি যুদ্ধ করেছিলেন?

সঠিক উত্তর: C) ৩টি

বিস্তারিত: বিসমার্কের নেতৃত্বে প্রাশিয়া তিনটি প্রধান যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করে: ১. ডেনমার্কের সাথে যুদ্ধ (১৮৬৪), ২. অস্ট্রিয়ার সাথে যুদ্ধ (১৮৬৬), এবং ৩. ফ্রান্সের সাথে যুদ্ধ (১৮৭০-৭১)।

প্রশ্ন ৭২: ‘পাওয়ার লুম’ বা শক্তিচালিত তাঁত কে আবিষ্কার করেন?

সঠিক উত্তর: B) এডমন্ড কার্টরাইট

বিস্তারিত: ১৭৮৫ সালে এডমন্ড কার্টরাইট পাওয়ার লুম আবিষ্কার করেন। এটি বাষ্পশক্তি দ্বারা চালিত হতো এবং বুননের প্রক্রিয়াকে স্বয়ংক্রিয় করে তোলে, যা বস্ত্র উৎপাদনে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসে।

প্রশ্ন ৭৩: ভিয়েনা সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রতিনিধি কে ছিলেন, যিনি পরাজিত ফ্রান্সের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন?

সঠিক উত্তর: D) তালেরাঁ

বিস্তারিত: শার্ল মরিস দে তালেরাঁ-পেরিগোর ছিলেন একজন অত্যন্ত চতুর ও অভিজ্ঞ কূটনীতিবিদ। তিনি ভিয়েনা সম্মেলনে বিজয়ী শক্তিদের মধ্যকার বিভেদকে কাজে লাগিয়ে পরাজিত ফ্রান্সের জন্য একটি সম্মানজনক স্থান আদায় করতে সক্ষম হন।

প্রশ্ন ৭৪: মার্কসের ‘ডাস ক্যাপিটাল’ (Das Kapital) গ্রন্থটির মূল বিষয়বস্তু কী?

সঠিক উত্তর: A) পুঁজিবাদের কার্যকারিতা ও তার অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্বের বিশ্লেষণ

বিস্তারিত: ‘ডাস ক্যাপিটাল’ বা ‘পুঁজি’ হল কার্ল মার্কসের magnum opus। এই গ্রন্থে তিনি উদ্বৃত্ত মূল্য তত্ত্ব, পুঁজির সঞ্চয়ন, এবং শ্রেণি শোষণের মতো ধারণার মাধ্যমে পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার একটি গভীর ও সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।

প্রশ্ন ৭৫: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবকে কেন ‘ব্যর্থ মহৎ প্রচেষ্টা’ (Magnificent Failure) বলা হয়?

সঠিক উত্তর: C) কারণ এর तात्ক্ষণিক লক্ষ্যগুলি অর্জিত না হলেও এটি ভবিষ্যতের পরিবর্তনের বীজ বপন করেছিল

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবগুলি তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয় ঐক্য বা উদারনৈতিক সংবিধান প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছিল এবং পুরাতন শক্তিগুলি পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসে। কিন্তু এই বিপ্লব মেটারনিখ ব্যবস্থার পতন ঘটায়, সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটায় এবং জাতীয়তাবাদী ও উদারনৈতিক চেতনাকে আরও শক্তিশালী করে, যা পরবর্তীকালে জার্মানি ও ইতালির ঐক্যকে সম্ভব করে তোলে।

প্রশ্ন ৭৬: জার্মানির উত্তর ও দক্ষিণ রাজ্যগুলির মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) উত্তরের রাজ্যগুলি প্রোটেস্ট্যান্ট ও প্রাশিয়ার সমর্থক, দক্ষিণেরগুলি ক্যাথলিক ও অস্ট্রিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল

বিস্তারিত: ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক এই বিভেদটি জার্মান ঐক্যের পথে একটি বড় বাধা ছিল। বিসমার্ককে প্রথমে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে উত্তর জার্মান কনফেডারেশন গঠন করতে হয়েছিল এবং পরে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে ক্যাথলিক দক্ষিণী রাজ্যগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হয়েছিল।

প্রশ্ন ৭৭: ক্রিমিয়ার যুদ্ধ (১৮৫৪-৫৬) ইতালির ঐক্যের সহায়ক হয়েছিল কেন?

সঠিক উত্তর: D) কারণ কাভুর ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সহানুভূতি অর্জন করেন এবং অস্ট্রিয়া মিত্রহীন হয়ে পড়ে

বিস্তারিত: কাভুর ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ব্রিটেনের ও ফ্রান্সের পক্ষে সৈন্য পাঠিয়ে তাদের গুডবুকে চলে আসেন। অন্যদিকে, অস্ট্রিয়া এই যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকায় রাশিয়া ও পশ্চিমী শক্তি, উভয় পক্ষের থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই কূটনৈতিক চাল কাভুরকে পরবর্তীকালে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে ফ্রান্সের সাহায্য পেতে এবং অস্ট্রিয়াকে একঘরে করতে সহায়তা করে।

প্রশ্ন ৭৮: প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংঘ (First International) কোথায় এবং কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

সঠিক উত্তর: A) লন্ডন, ১৮৬৪

বিস্তারিত: ১৮৬৪ সালে লন্ডনে বিভিন্ন দেশের শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংঘ বা First International প্রতিষ্ঠিত হয়। কার্ল মার্কস এর প্রতিষ্ঠায় এবং নীতি নির্ধারণে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।

প্রশ্ন ৭৯: ‘স্পিনিং মিউল’ নামক যন্ত্রটি কে আবিষ্কার করেন?

সঠিক উত্তর: C) স্যামুয়েল ক্রম্পটন

বিস্তারিত: ১৭৭৯ সালে স্যামুয়েল ক্রম্পটন ‘স্পিনিং মিউল’ আবিষ্কার করেন। এই যন্ত্রটি ‘স্পিনিং জেনি’ এবং ‘ওয়াটার ফ্রেম’-এর উৎকৃষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলিকে একত্রিত করেছিল। এটি একই সাথে মিহি ও শক্ত সুতা তৈরি করতে পারত, যা বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে।

প্রশ্ন ৮০: কোন ঘটনাকে ‘মেটারনিখ ব্যবস্থার’ কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে গণ্য করা হয়?

সঠিক উত্তর: B) ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লব ও মেটারনিখের পতন

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের ঢেউ ভিয়েনায় পৌঁছালে প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে মেটারনিখ পদত্যাগ করে ইংল্যান্ডে পালাতে বাধ্য হন। তার পতনই ছিল ইউরোপ থেকে তার প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক বিদায়।

প্রশ্ন ৮১: শিল্প বিপ্লবের সময় ইংল্যান্ডের প্রধান দুটি শিল্প কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) বস্ত্র ও লৌহ শিল্প

বিস্তারিত: নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে বস্ত্রশিল্পে এবং কয়লার ব্যাপক ব্যবহার ও নতুন প্রযুক্তির ফলে লৌহশিল্পে প্রথম বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। এই দুটি শিল্পই ছিল প্রথম পর্বের শিল্প বিপ্লবের ভিত্তি।

প্রশ্ন ৮২: ‘ইল রিসর্জিমেন্টো’ (Il Risorgimento) নামক পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: A) কাভুর

বিস্তারিত: রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যোগ দেওয়ার আগে কাভুর এই পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি ইতালির অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সাংবিধানিক সংস্কার এবং জাতীয়তাবাদের পক্ষে তার মতামত প্রকাশ করতেন। ইতালির ঐক্য আন্দোলনের নামও এই পত্রিকার নামানুসারেই জনপ্রিয় হয়।

প্রশ্ন ৮৩: জার্মানির কোন দার্শনিকের লেখা জাতীয়তাবাদী ভাবনাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল?

সঠিক উত্তর: C) হেগেল ও হার্ডার

বিস্তারিত: জোহান গটফ্রিড হার্ডার ‘ভোকসগাইস্ট’ বা ‘জাতির আত্মা’র ধারণা দেন, যা ভাষা ও সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যকে গুরুত্ব দেয়। অন্যদিকে, জি.ডব্লিউ.এফ. হেগেলের রাষ্ট্রকেন্দ্রিক দর্শন প্রাশিয়ার মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রকে জার্মান ঐক্যের চালিকাশক্তি হিসেবে তুলে ধরে, যা বিসমার্ককে প্রভাবিত করে।

প্রশ্ন ৮৪: ১৮৭১ সালের প্যারিস কমিউন কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) প্যারিসের শ্রমিক ও সমাজতন্ত্রীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি বিপ্লবী সরকার

বিস্তারিত: ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়ান যুদ্ধে ফ্রান্সের পরাজয়ের পর প্যারিসের জনগণ, বিশেষ করে শ্রমিক ও সমাজতন্ত্রীরা, জাতীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বল্প সময়ের জন্য (প্রায় দুই মাস) প্যারিসে নিজেদের বিপ্লবী শাসন প্রতিষ্ঠা করে। একেই ‘প্যারিস কমিউন’ বলা হয়। এটিকে বিশ্বের প্রথম সর্বহারা সরকারের প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা হয়।

প্রশ্ন ৮৫: ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের অন্যতম পূর্বশর্ত কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) কৃষি বিপ্লব

বিস্তারিত: শিল্প বিপ্লবের ঠিক আগে ইংল্যান্ডে একটি কৃষি বিপ্লব ঘটেছিল। নতুন চাষাবাদ পদ্ধতি, উন্নত বীজ ও যন্ত্রপাতির ব্যবহারের ফলে খাদ্য উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এর ফলে জনসংখ্যার বৃদ্ধিকে সমর্থন করা এবং গ্রামের অতিরিক্ত জনসংখ্যাকে কারখানার শ্রমের জন্য শহরে পাঠানো সম্ভব হয়েছিল।

প্রশ্ন ৮৬: গ্যাস্টাইনের চুক্তি (Convention of Gastein) কোন দুটি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়া

বিস্তারিত: ১৮৬৪ সালে ডেনমার্ককে পরাজিত করার পর শ্লেজউইগ ও হলস্টাইন প্রদেশ দুটির প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে ১৮৬৫ সালে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার মধ্যে এই চুক্তি হয়। বিসমার্ক ইচ্ছাকৃতভাবে একটি জটিল ব্যবস্থা তৈরি করেন যাতে ভবিষ্যতে অস্ট্রিয়ার সাথে যুদ্ধের অজুহাত খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ৮৭: ‘ভিল্লাফ্রাঙ্কার যুদ্ধবিরতি’ (Armistice of Villafranca) কোন যুদ্ধের অবসান ঘটায়?

সঠিক উত্তর: C) ১৮৫৯ সালের অস্ট্রিয়া-পিডমন্ট যুদ্ধ

বিস্তারিত: ফ্রান্স ও পিডমন্টের সম্মিলিত বাহিনী অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করলেও, তৃতীয় নেপোলিয়ন হঠাৎ করে অস্ট্রিয়ার সাথে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেন। এতে কাভুর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন কারণ চুক্তি অনুযায়ী শুধুমাত্র লোম্বার্ডি পিডমন্টকে দেওয়া হয়, ভেনেশিয়া অস্ট্রিয়ার হাতেই থেকে যায়।

প্রশ্ন ৮৮: রবার্ট ফুলটন কী আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত?

সঠিক উত্তর: B) বাণিজ্যিকভাবে সফল বাষ্পীয় জাহাজ (Steamboat)

বিস্তারিত: আমেরিকান প্রকৌশলী রবার্ট ফুলটন ১৮০৭ সালে ‘ Clermont’ নামে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সফল বাষ্পীয় জাহাজ তৈরি করেন, যা জলপথে পরিবহনে বিপ্লব এনেছিল।

প্রশ্ন ৮৯: ট্রপো সম্মেলনের (Congress of Troppau) মূল সিদ্ধান্ত কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) ইউরোপের যেকোনো দেশে বিপ্লব ঘটলে শক্তি প্রয়োগ করে তা দমন করার অধিকার প্রতিষ্ঠা

বিস্তারিত: ১৮২০ সালে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে মেটারনিখের প্রভাবে ‘ট্রপো প্রোটোকল’ গৃহীত হয়। এতে বলা হয়, যে রাষ্ট্র বিপ্লবের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করবে, তাকে ইউরোপীয় শক্তি সমবায় থেকে বহিষ্কার করা হবে এবং প্রয়োজন হলে শক্তি প্রয়োগ করে সেখানে বৈধ শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। এটি ছিল মেটারনিখ ব্যবস্থার এক চরম প্রতিক্রিয়াশীল পদক্ষেপ।

প্রশ্ন ৯০: হেনরি বেসেমার কোন প্রক্রিয়ার উন্নতি সাধন করেন?

সঠিক উত্তর: A) কম খরচে大量 ইস্পাত তৈরির প্রক্রিয়া

বিস্তারিত: ১৮৫৬ সালে হেনরি বেসেমার ‘বেসেমার প্রক্রিয়া’ আবিষ্কার করেন, যার মাধ্যমে গলিত পিগ আয়রন থেকে বাতাস চালনা করে দ্রুত ও কম খরচে大量 ইস্পাত তৈরি করা সম্ভব হয়। এটি দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

প্রশ্ন ৯১: ১৮৪৮ সালে অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের কোন জাতিগোষ্ঠীগুলি বিদ্রোহ করেছিল?

সঠিক উত্তর: B) হাঙ্গেরীয়, চেক, ইতালীয়, পোল প্রভৃতি

বিস্তারিত: অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্য ছিল বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ‘কারাগার’ (Prison of nations)। ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের সময় জার্মান-ভাষী অস্ট্রিয়ানদের পাশাপাশি সাম্রাজ্যের অধীনস্থ প্রায় সমস্ত প্রধান জাতিগোষ্ঠী (যেমন হাঙ্গেরীয় বা ম্যাগিয়ার, চেক, স্লোভাক, পোল, ইতালীয়) জাতীয় স্বায়ত্তশাসন বা স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ করে।

প্রশ্ন ৯২: জার্মানির ঐক্য সাধনে প্রাশিয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কে ছিল?

সঠিক উত্তর: C) অস্ট্রিয়া

বিস্তারিত: ভিয়েনা সম্মেলনের সময় থেকেই জার্মান কনফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে অস্ট্রিয়া জার্মান রাজ্যগুলির উপর প্রভাব বিস্তার করত। তাই প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানির ঐক্য সাধনের প্রধান বাধা ছিল অস্ট্রিয়া। বিসমার্ককে প্রথমে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করেই উত্তর জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হয়েছিল।

প্রশ্ন ৯৩: গ্যারিবল্ডির ‘হাজারের অভিযান’ (Expedition of the Thousand) বলতে কী বোঝানো হয়?

সঠিক উত্তর: D) তার ১০০০ লাল কোর্তা বাহিনী নিয়ে সিসিলি ও নেপলস জয়ের অভিযান

বিস্তারিত: ১৮৬০ সালে গ্যারিবল্ডি মাত্র এক হাজার স্বেচ্ছাসেবী (লাল কোর্তা বাহিনী) নিয়ে দক্ষিণ ইতালির বুরবোঁ শাসিত সিসিলি ও নেপলস রাজ্যদুটি জয় করেন। এই দুঃসাহসিক অভিযান ইতালির ঐক্যকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যায়।

প্রশ্ন ৯৪: ‘অ্যাডাম স্মিথ’ কোন গ্রন্থের রচয়িতা?

সঠিক উত্তর: A) The Wealth of Nations

বিস্তারিত: ১৭৭৬ সালে প্রকাশিত এই গ্রন্থটিতে অ্যাডাম স্মিথ অবাধ বাণিজ্য নীতি বা লেসে-ফেয়ার (Laissez-faire) অর্থনীতির ধারণা দেন, যা উদারনীতিবাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি স্থাপন করে এবং আধুনিক অর্থশাস্ত্রের সূচনা করে।

প্রশ্ন ৯৫: ‘জুন বিদ্রোহ’ (June Days Uprising) ১৮৪৮ সালে কোথায় হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: C) প্যারিস

বিস্তারিত: ফ্রান্সের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র সরকার যখন ‘জাতীয় কারখানা’গুলি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন প্যারিসের শ্রমিকরা বিদ্রোহ করে। জেনারেল কাভেনিয়াকের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী এই বিদ্রোহ নৃশংসভাবে দমন করে। এই ঘটনাটি বুর্জোয়া ও শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে বিভেদকে স্পষ্ট করে তোলে।

প্রশ্ন ৯৬: বিসমার্কের ‘কুলটুরক্যাম্পফ’ (Kulturkampf) নীতি কাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: B) ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে

বিস্তারিত: ‘কুলটুরক্যাম্পফ’ বা ‘সংস্কৃতির সংগ্রাম’ ছিল নবগঠিত জার্মান রাষ্ট্রে ক্যাথলিক চার্চের রাজনৈতিক প্রভাব খর্ব করার জন্য বিসমার্কের একটি প্রচেষ্টা। তিনি রাষ্ট্রের কর্তৃত্বকে সর্বোচ্চ স্থানে রাখতে চেয়েছিলেন।

প্রশ্ন ৯৭: ম্যানচেস্টার শহর শিল্প বিপ্লবের সময় কোন শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল?

সঠিক উত্তর: D) সুতি বস্ত্র শিল্প

বিস্তারিত: ম্যানচেস্টার ছিল বিশ্বের প্রথম শিল্পায়িত শহর এবং এটি ছিল ব্রিটিশ সুতি বস্ত্র শিল্পের কেন্দ্রস্থল। এর কারখানাগুলির জন্য এটিকে ‘কটনোপলিস’ (Cottonopolis) বলা হত।

প্রশ্ন ৯৮: ইতালির ঐক্য সম্পূর্ণ হওয়ার পর রাজধানী কোথায় স্থানান্তরিত করা হয়?

সঠিক উত্তর: A) রোম

বিস্তারিত: ১৮৭০ সালে রোম ইতালির সাথে যুক্ত হওয়ার পর, ১৮৭১ সালে রাজধানী ফ্লোরেন্স থেকে রোমে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের কেন্দ্র হওয়ায় রোমকে রাজধানী করাটা ছিল প্রতীকীভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন ৯৯: জন স্টুয়ার্ট মিল কোন মতাদর্শের অন্যতম প্রধান প্রবক্তা ছিলেন?

সঠিক উত্তর: C) উদারনীতিবাদ

বিস্তারিত: ব্রিটিশ দার্শনিক জন স্টুয়ার্ট মিল ছিলেন উনিশ শতকের উদারনীতিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা। তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘On Liberty’-তে তিনি ব্যক্তির স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং নারী অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন।

প্রশ্ন ১০০: ১৮৩০ সালের পোলিশ বিদ্রোহ কাদের বিরুদ্ধে হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: B) রাশিয়া

বিস্তারিত: ভিয়েনা সম্মেলনের মাধ্যমে পোল্যান্ডের একটি বড় অংশ রাশিয়ার জারকে দেওয়া হয়েছিল। ১৮৩০ সালে জুলাই বিপ্লবের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে পোলিশ জাতীয়তাবাদীরা রুশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, যা ‘নভেম্বর বিদ্রোহ’ নামেও পরিচিত। কিন্তু এই বিদ্রোহ নৃশংসভাবে দমন করা হয়।

প্রশ্ন ১০১: দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের প্রধান চালিকাশক্তি কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম ও ইস্পাত

বিস্তারিত: ১৮৭০ সালের পর থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের মূল ভিত্তি ছিল নতুন শক্তি উৎস যেমন বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়াম এবং নতুন দ্রব্য যেমন উন্নত মানের ইস্পাত ও রাসায়নিক সামগ্রী। এর কেন্দ্র ছিল জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

প্রশ্ন ১০২: মেটারনিখ কোন দেশের চ্যান্সেলর বা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন?

সঠিক উত্তর: A) অস্ট্রিয়া

বিস্তারিত: প্রিন্স ক্লেমেন্স ফন মেটারনিখ ১৮০৯ থেকে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ১৮২১ সাল থেকে চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ইউরোপীয় রাজনীতিতে রক্ষণশীলতার প্রতীক হয়ে ওঠেন।

প্রশ্ন ১০৩: প্রাগের চুক্তি (Peace of Prague) কোন যুদ্ধের অবসান ঘটায়?

সঠিক উত্তর: C) অস্ট্রিয়া-প্রুশিয়ান যুদ্ধ

বিস্তারিত: ১৮৬৬ সালে স্যাডোয়ার যুদ্ধে অস্ট্রিয়া পরাজিত হওয়ার পর এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে অস্ট্রিয়াকে জার্মান কনফেডারেশন থেকে বহিষ্কার করা হয়, ভেনেশিয়া ইতালিকে হস্তান্তর করা হয় এবং প্রাশিয়ার নেতৃত্বে উত্তর জার্মান কনফেডারেশন গঠনের পথ খুলে যায়।

প্রশ্ন ১০৪: ভিয়েনা কংগ্রেসের পর কাকে “ইউরোপের পুলিশ” বলা হত?

সঠিক উত্তর: B) অস্ট্রিয়া

বিস্তারিত: চ্যান্সেলর মেটারনিখের নেতৃত্বে অস্ট্রিয়া ইউরোপ জুড়ে বিপ্লবী, জাতীয়তাবাদী এবং উদারপন্থী আন্দোলন দমনে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। এই কারণে অস্ট্রিয়াকে প্রায়শই “ইউরোপের পুলিশ” বা দমননীতির কেন্দ্র হিসাবে উল্লেখ করা হত।

প্রশ্ন ১০৫: শিল্প বিপ্লবের ফলে উদ্ভূত শ্রমিক শ্রেণির জীবনযাত্রার মান কেমন ছিল?

সঠিক উত্তর: D) অত্যন্ত শোচনীয়, অস্বাস্থ্যকর ও নিরাপত্তাহীন

বিস্তারিত: শিল্প বিপ্লবের প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রমিকদের দীর্ঘ সময় ধরে (১২-১৬ ঘন্টা) কাজ করতে হত, তাদের মজুরি ছিল খুব কম, কারখানার পরিবেশ ছিল বিপজ্জনক এবং তারা অস্বাস্থ্যকর, ঘিঞ্জি বস্তিতে বাস করত। শিশুশ্রম ছিল একটি সাধারণ ঘটনা।

প্রশ্ন ১০৬: “কাইজার” কোন দেশের সম্রাটের উপাধি ছিল?

সঠিক উত্তর: A) জার্মানি

বিস্তারিত: রোমান সম্রাট ‘সিজার’ (Caesar) থেকে ‘কাইজার’ (Kaiser) শব্দটি এসেছে। এটি ১৮৭১ থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত জার্মান সাম্রাজ্যের সম্রাটদের উপাধি ছিল।

প্রশ্ন ১০৭: কোন বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্রান্সে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের অবসান এবং দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের সূচনা হয়?

সঠিক উত্তর: C) ১৮৫১ সালের লুই নেপোলিয়নের অভ্যুত্থান

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর, লুই নেপোলিয়ন ১৮৫১ সালের ২ ডিসেম্বর একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। পরের বছর (১৮৫২) তিনি নিজেকে ‘সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন’ ঘোষণা করে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের অবসান ঘটান এবং দ্বিতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রশ্ন ১০৮: “জার্মানি একটি ভৌগোলিক সংজ্ঞা মাত্র” – এই ধরনের ধারণা কোন ব্যবস্থার পরিচায়ক?

সঠিক উত্তর: B) মেটারনিখ ব্যবস্থা

বিস্তারিত: মেটারনিখ ইতালিকে “একটি ভৌগোলিক সংজ্ঞা মাত্র” (“a mere geographical expression”) বলে অভিহিত করেছিলেন। এই উক্তিটি ইতালি ও জার্মানির মতো বিভক্ত জাতিগুলির প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক ছিল। তিনি এই জাতিগুলির রাজনৈতিক ঐক্য ও জাতীয়তাবাদের ঘোর বিরোধী ছিলেন।

প্রশ্ন ১০৯: শিল্প বিপ্লবের সময় ব্যবহৃত প্রধান শক্তি উৎস কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) কয়লা

বিস্তারিত: কয়লা ছিল শিল্প বিপ্লবের মূল চালিকাশক্তি। এটি বাষ্পীয় ইঞ্জিন চালাতে, লোহা গলাতে এবং কারখানা ও বাড়িতে শক্তি সরবরাহ করতে ব্যবহৃত হত। ইংল্যান্ডের বিশাল কয়লার ভান্ডার তার শিল্পায়নে একটি বড় সুবিধা দিয়েছিল।

প্রশ্ন ১১০: ‘নর্থ জার্মান কনফেডারেশন’ কবে গঠিত হয়?

সঠিক উত্তর: A) ১৮৬৭

বিস্তারিত: ১৮৬৬ সালে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করার পর, বিসমার্ক মাইন নদীর উত্তরের সমস্ত জার্মান রাজ্যগুলিকে নিয়ে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে এই কনফেডারেশন বা রাষ্ট্রসংঘ গঠন করেন। এটি ছিল ঐক্যবদ্ধ জার্মানি গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

প্রশ্ন ১১১: কোন ফরাসি সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্রীয় খরচে ‘সামাজিক কারখানা’ (Social Workshops) তৈরির প্রস্তাব দেন?

সঠিক উত্তর: B) লুই ব্লাঁ

বিস্তারিত: লুই ব্লাঁ তার “The Organization of Labour” (১৮৩৯) গ্রন্থে বেকারত্ব সমস্যার সমাধানের জন্য রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত ‘সামাজিক কারখানা’ স্থাপনের প্রস্তাব করেন। তার এই ধারণা ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর প্রতিষ্ঠিত ‘জাতীয় কারখানা’কে প্রভাবিত করেছিল।

প্রশ্ন ১১২: ভিয়েনা কংগ্রেসে রাশিয়ার প্রধান দাবি কী ছিল?

সঠিক উত্তর: C) পোল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশ

বিস্তারিত: রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার নেপোলিয়নের তৈরি ‘গ্র্যান্ড ডাচি অফ ওয়ারশ’ সহ পোল্যান্ডের সিংহভাগ অঞ্চল দাবি করেছিলেন। ব্রিটেন ও অস্ট্রিয়ার বিরোধিতার পর একটি রফা সূত্রে পোল্যান্ডকে রাশিয়া, প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে পুনরায় ভাগ করা হয়, যার সবচেয়ে বড় অংশটি রাশিয়া পায়।

প্রশ্ন ১১৩: ইতালির ঐক্য আন্দোলনে গ্যারিবল্ডিকে কী বলা হয়?

সঠিক উত্তর: A) তরবারি (The Sword)

বিস্তারিত: তার সামরিক প্রতিভা, সাহস এবং সফল অভিযানের (বিশেষ করে লাল কোর্তা বাহিনীর সাহায্যে দক্ষিণ ইতালি জয়) জন্য জিউসেপ্পে গ্যারিবল্ডিকে ইতালির ঐক্য আন্দোলনের ‘তরবারি’ বা সশস্ত্র শক্তি হিসেবে অভিহিত করা হয়।

প্রশ্ন ১১৪: জার্মানির ঐক্য কোন রাষ্ট্রের নেতৃত্বে সম্পন্ন হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: D) প্রাশিয়া

বিস্তারিত: প্রাশিয়া ছিল জার্মান রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী, শিল্পোন্নত এবং সামরিকভাবে উন্নত। চ্যান্সেলর বিসমার্ক এবং রাজা প্রথম উইলিয়ামের নেতৃত্বে প্রাশিয়াই জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় এবং ঐক্যবদ্ধ জার্মানির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

প্রশ্ন ১১৫: ‘চার্টিস্ট আন্দোলন’ কোথায় হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: C) ব্রিটেন

বিস্তারিত: চার্টিস্ট আন্দোলন ছিল ব্রিটেনের শ্রমিক শ্রেণির একটি রাজনৈতিক আন্দোলন (১৮৩৮-১৮৪৮)। তারা ‘পিপলস চার্টার’ নামে একটি দাবিপত্রে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ভোটাধিকার, গোপন ব্যালট, বেতনভোগী সাংসদ প্রভৃতি দাবি জানায়। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে ব্যর্থ হয়, এর অধিকাংশ দাবিই পরবর্তীকালে বাস্তবায়িত হয়েছিল।

প্রশ্ন ১১৬: লুই ফিলিপকে কেন ‘নাগরিক রাজা’ (Citizen King) বলা হত?

সঠিক উত্তর: A) কারণ তিনি ‘ফ্রান্সের রাজা’র পরিবর্তে ‘ফরাসিদের রাজা’ উপাধি নেন এবং সাধারণ মানুষের মতো আচরণ করতেন

বিস্তারিত: পূর্ববর্তী বুরবোঁ রাজাদের ঐশ্বরিক অধিকারের ধারণার বিপরীতে, লুই ফিলিপ জনগণের সম্মতিতে রাজা হয়েছেন—এই ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রায়শই সাধারণ পোশাকে প্যারিসের রাস্তায় হাঁটতেন, যা তার ‘নাগরিক রাজা’ ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল।

প্রশ্ন ১১৭: ‘ম্যাকঅ্যাডামাইজেশন’ (Macadamisation) কীসের সঙ্গে সম্পর্কিত?

সঠিক উত্তর: D) রাস্তা নির্মাণ পদ্ধতি

বিস্তারিত: স্কটিশ প্রকৌশলী জন ম্যাকঅ্যাডাম একটি উন্নত ও টেকসই রাস্তা নির্মাণের কৌশল আবিষ্কার করেন, যেখানে ভাঙা পাথরের বিভিন্ন স্তর ব্যবহার করা হত। এই পদ্ধতিটি ‘ম্যাকঅ্যাডামাইজেশন’ নামে পরিচিত এবং এটি শিল্প বিপ্লবের সময় সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক উন্নতি ঘটায়।

প্রশ্ন ১১৮: বিসমার্ক কাকে ‘জল ইঁদুর’ (water rat) বলে উপহাস করতেন?

সঠিক উত্তর: B) গ্ল্যাডস্টোন

বিস্তারিত: বিসমার্ক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম গ্ল্যাডস্টোনের নৈতিকতাবাদী এবং আদর্শবাদী রাজনীতির প্রতি খুব একটা শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। তিনি ব্রিটেনের নৌ-শক্তি এবং দ্বীপ রাষ্ট্র হিসেবে তার অবস্থানের কারণে তাকে ব্যঙ্গ করে ‘জল ইঁদুর’ বলে উল্লেখ করতেন।

প্রশ্ন ১১৯: ‘সর্বহারার একনায়কতন্ত্র’ (Dictatorship of the Proletariat) ধারণাটি কার?

সঠিক উত্তর: C) কার্ল মার্কস

বিস্তারিত: মার্কসের তত্ত্বে, পুঁজিবাদী বিপ্লবের পর সমাজতন্ত্রে উত্তরণের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন অবস্থা প্রয়োজন হবে। এই অবস্থায় শ্রমিক শ্রেণি বা সর্বহারা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে একটি একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, যার উদ্দেশ্য হবে বুর্জোয়া শ্রেণির প্রতিরোধকে দমন করা এবং শ্রেণিহীন সাম্যবাদী সমাজে উত্তরণের পথ তৈরি করা।

প্রশ্ন ১২০: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবকে ‘জাতিসমূহের বসন্ত’ (Springtime of the Peoples) বলার কারণ কী?

সঠিক উত্তর: A) কারণ এটি ইউরোপ জুড়ে বহু জাতির মধ্যে জাতীয়তাবাদী জাগরণ ও বিদ্রোহের জন্ম দিয়েছিল

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্য, জার্মানি, ইতালি সহ ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশে বিপ্লবের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই জাতীয়তাবাদী আকাঙ্ক্ষা একটি প্রধান চালিকাশক্তি ছিল, যা দেখে মনে হচ্ছিল যেন ইউরোপের জাতিগুলি দীর্ঘ শীতের পর বসন্তের মতো জেগে উঠছে।

প্রশ্ন ১২১: কোন চুক্তির মাধ্যমে ভিয়েনা কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে?

সঠিক উত্তর: C) ভিয়েনা চূড়ান্ত আইন (Final Act of Vienna)

বিস্তারিত: ১৮১৫ সালের ৯ই জুন, ওয়াটারলু যুদ্ধের ঠিক আগে, ভিয়েনা কংগ্রেসে গৃহীত সমস্ত সিদ্ধান্তগুলিকে একত্রিত করে ‘ভিয়েনা চূড়ান্ত আইন’ নামক একটি দলিলে স্বাক্ষর করা হয়। এটিই ছিল কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি।

প্রশ্ন ১২২: ঐক্যবদ্ধ জার্মানির আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) রাইখস্ট্যাগ (Reichstag)

বিস্তারিত: ঐক্যবদ্ধ জার্মান সাম্রাজ্যের দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার নিম্নকক্ষ ছিল রাইখস্ট্যাগ, যার সদস্যরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত হতেন। উচ্চকক্ষ ছিল বুন্দেসরাত।

প্রশ্ন ১২৩: জোলভেরাইনের প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) জার্মান রাজ্যগুলির মধ্যে বাণিজ্য শুল্ক দূর করে অর্থনৈতিক ঐক্য তৈরি করা

বিস্তারিত: জোলভেরাইন বা শুল্ক সংঘের মূল লক্ষ্য ছিল সদস্য রাজ্যগুলির মধ্যে থাকা অসংখ্য অভ্যন্তরীণ শুল্ক বাধা দূর করে একটি মুক্ত বাণিজ্য এলাকা তৈরি করা। এটি জার্মানির অর্থনৈতিক একীকরণের পথে একটি বিশাল পদক্ষেপ ছিল, যা রাজনৈতিক ঐক্যকে সহজতর করে।

প্রশ্ন ১২৪: প্রথম বাষ্পচালিত জাহাজ ‘ Clermont’ কোন নদীতে যাত্রা শুরু করে?

সঠিক উত্তর: D) হাডসন নদী

বিস্তারিত: রবার্ট ফুলটনের ‘ Clermont’ ১৮০৭ সালে নিউ ইয়র্ক সিটির হাডসন নদীতে তার প্রথম সফল যাত্রা সম্পন্ন করে, যা নিউ ইয়র্ক থেকে আলবানি পর্যন্ত ছিল।

প্রশ্ন ১২৫: ইতালির কোন জাতীয়তাবাদী নেতাকে ‘রিসর্জিমেন্টোর ভাবগুরু’ বা ‘আত্মা’ বলা হয়?

সঠিক উত্তর: B) ম্যাৎসিনি

বিস্তারিত: জোসেফ ম্যাৎসিনি তার লেখনী, আদর্শ এবং ‘তরুণ ইতালি’ সংগঠনের মাধ্যমে ইতালির জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার আগুন জ্বালিয়েছিলেন। তার আদর্শবাদী অনুপ্রেরণার জন্যই তাকে ঐক্য আন্দোলনের ‘আত্মা’ বা ‘ভাবগুরু’ বলা হয়।

প্রশ্ন ১২৬: কোন যুদ্ধের ফলে ইতালি ভেনেশিয়া লাভ করে?

সঠিক উত্তর: C) অস্ট্রিয়া-প্রুশিয়ান যুদ্ধ (স্যাডোয়ার যুদ্ধ)

বিস্তারিত: ১৮৬৬ সালের অস্ট্রিয়া-প্রুশিয়ান যুদ্ধে ইতালি প্রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছিল। যুদ্ধে অস্ট্রিয়া পরাজিত হলে, চুক্তির শর্তানুযায়ী অস্ট্রিয়া ভেনেশিয়া প্রদেশটি ইতালিকে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।

প্রশ্ন ১২৭: ১৮৪৮ সালে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের মূল কারণ কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) লুই ফিলিপের শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অসন্তোষ এবং ভোটাধিকারের দাবি

বিস্তারিত: লুই ফিলিপের বুর্জোয়া-কেন্দ্রিক শাসন, সীমিত ভোটাধিকার, দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রমিক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। ভোটাধিকার সংস্কারের দাবিতে আয়োজিত একটি ভোজসভা সরকার নিষিদ্ধ করলে বিপ্লব শুরু হয়।

প্রশ্ন ১২৮: ১৮১৫ সালে কোন দুটি দেশকে একত্রিত করে ‘নেদারল্যান্ডস রাজ্য’ তৈরি করা হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: D) হল্যান্ড ও বেলজিয়াম

বিস্তারিত: ভিয়েনা কংগ্রেস ফ্রান্সের উত্তরে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে প্রোটেস্ট্যান্ট হল্যান্ডের সাথে ক্যাথলিক বেলজিয়ামকে জোর করে জুড়ে দিয়ে ‘সম্মিলিত নেদারল্যান্ডস রাজ্য’ গঠন করে। এই ব্যবস্থা বেশিদিন টেকেনি এবং ১৮৩০ সালে বেলজিয়াম স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

প্রশ্ন ১২৯: শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট পরিবেশগত প্রধান সমস্যা কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) ব্যাপক বায়ু ও জল দূষণ

বিস্তারিত: কারখানার চিমনি থেকে নির্গত কয়লার ধোঁয়া এবং কারখানার বর্জ্য পদার্থ নদী ও খালে ফেলার ফলে শিল্প শহরগুলিতে ভয়াবহ বায়ু ও জল দূষণের সৃষ্টি হয়, যা জনস্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল।

প্রশ্ন ১৩০: দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে?

সঠিক উত্তর: C) লুই নেপোলিয়ন (তৃতীয় নেপোলিয়ন)

বিস্তারিত: ১৮৫২ সালে, দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি লুই নেপোলিয়ন বোনাপার্ট নিজেকে ‘সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন’ হিসেবে ঘোষণা করে দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্য (১৮৫২-১৮৭০) প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রশ্ন ১৩১: ১৮৪৮ সালে ‘মার্চ আইন’ কোন দেশে উদারনৈতিক সংস্কার নিয়ে আসে?

সঠিক উত্তর: A) হাঙ্গেরি

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের চাপে অস্ট্রিয়ার সম্রাট হাঙ্গেরির জন্য ‘মার্চ আইন’ (March Laws) অনুমোদন করতে বাধ্য হন। এই আইনগুলির মাধ্যমে হাঙ্গেরি প্রায়-স্বাধীন একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল, যদিও এটি ছিল ক্ষণস্থায়ী।

প্রশ্ন ১৩২: উনিশ শতকে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক নীতির মূল ভিত্তি কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) মুক্ত বাণিজ্য

বিস্তারিত: শিল্প বিপ্লবের পর ব্রিটেন বিশ্বের প্রধান শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়। তার উৎপাদিত পণ্য বিশ্ববাজারে বিক্রি করার জন্য এবং সস্তায় কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্রিটেন সংরক্ষণবাদের পরিবর্তে মুক্ত বাণিজ্য বা Free Trade নীতির প্রধান প্রবক্তা হয়ে ওঠে।

প্রশ্ন ১৩৩: কাকে ‘আয়রন চ্যান্সেলর’ (Iron Chancellor) বলা হয়?

সঠিক উত্তর: B) বিসমার্ক

বিস্তারিত: অটো ফন বিসমার্কের ‘রক্ত ও লৌহ’ নীতি এবং তার কঠোর, বাস্তববাদী ও আপোষহীন কূটনীতির জন্য তাকে ‘লৌহ চ্যান্সেলর’ বা ‘Iron Chancellor’ বলা হত।

প্রশ্ন ১৩৪: কোন বস্তুর আবিষ্কার বস্ত্রশিল্পে সুতোর সংকট দূর করে উৎপাদন বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়?

সঠিক উত্তর: C) স্পিনিং জেনি ও ওয়াটার ফ্রেম

বিস্তারিত: ফ্লাইং শাটল আবিষ্কারের ফলে বুননের গতি বাড়লে সুতোর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। এই চাহিদা মেটাতে জেমস হারগ্রিভসের ‘স্পিনিং জেনি’ এবং রিচার্ড আর্করাইটের ‘ওয়াটার ফ্রেম’ আবিষ্কার হয়, যা একসঙ্গে অনেক বেশি সুতো কাটতে পারত এবং বস্ত্রশিল্পে বিপ্লব এনেছিল।

প্রশ্ন ১৩৫: ‘কমিউনিস্ট লিগ’ -এর অনুরোধে মার্কস ও এঙ্গেলস কোন বিখ্যাত রচনাটি লেখেন?

সঠিক উত্তর: A) কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো

বিস্তারিত: ‘কমিউনিস্ট লিগ’ নামক একটি আন্তর্জাতিক বিপ্লবী সংগঠন তাদের নীতি ও কর্মসূচির একটি সুস্পষ্ট ঘোষণাপত্র রচনার জন্য কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলসকে দায়িত্ব দেয়। এর ফলেই ১৮৪৮ সালে ‘কমিউনিস্ট পার্টির ম্যানিফেস্টো’ রচিত হয়।

প্রশ্ন ১৩৬: ম্যাৎসিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

সঠিক উত্তর: C) জেনোয়া

বিস্তারিত: ইতালির বিখ্যাত জাতীয়তাবাদী নেতা জোসেফ ম্যাৎসিনি ১৮০৫ সালে জেনোয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেন, যা সেই সময়ে লিগুরিয়ান প্রজাতন্ত্রের অংশ ছিল এবং পরে পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়।

প্রশ্ন ১৩৭: উনিশ শতকের রক্ষণশীলতাবাদের মূল ভিত্তি কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) ঐতিহ্য, প্রতিষ্ঠান (রাজতন্ত্র, চার্চ) ও সামাজিক স্তরবিন্যাস বজায় রাখা

বিস্তারিত: এডমন্ড বার্কের মতো চিন্তাবিদদের দ্বারা প্রভাবিত রক্ষণশীলতাবাদীরা ফরাসি বিপ্লবের মতো আকস্মিক ও হিংসাত্মক পরিবর্তনের বিরোধী ছিলেন। তারা মনে করতেন যে ঐতিহ্য, প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান এবং একটি সুশৃঙ্খল সমাজই স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি। মেটারনিখ ছিলেন এই মতাদর্শের প্রধান প্রতিভূ।

প্রশ্ন ১৩৮: শিল্প বিপ্লবের সময় গড়ে ওঠা নতুন শহরগুলির প্রধান সমস্যা কী ছিল?

সঠিক উত্তর: D) অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন সংকট এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব

বিস্তারিত: খুব দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শিল্প শহরগুলি অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে। শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত বাসস্থান ছিল না, যা ছিল অস্বাস্থ্যকর ও ঘিঞ্জি। সঠিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় কলেরা, টাইফয়েডের মতো রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ত।

প্রশ্ন ১৩৯: লুই কসুথ কোন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?

সঠিক উত্তর: A) হাঙ্গেরি

বিস্তারিত: লুই কসুথ ছিলেন ১৮৪৮ সালে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী বিদ্রোহের প্রধান নেতা এবং হাঙ্গেরির জাতীয় বীর।

প্রশ্ন ১৪০: ‘রিয়েলপলিটিক’ (Realpolitik) নীতির প্রবক্তা কে?

সঠিক উত্তর: C) বিসমার্ক

বিস্তারিত: ‘রিয়েলপলিটিক’ হল একটি রাজনৈতিক দর্শন যা আদর্শ বা নৈতিকতার পরিবর্তে রাষ্ট্রের স্বার্থ ও ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে বাস্তববাদী নীতি গ্রহণকে গুরুত্ব দেয়। বিসমার্ক ছিলেন এই নীতির শ্রেষ্ঠ প্রয়োগকারী। তিনি নৈতিকতা বা জনমতের তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র প্রাশিয়ার স্বার্থসিদ্ধির জন্য কূটনীতি ও যুদ্ধের আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রশ্ন ১৪১: ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট’ কোন সালে বসেছিল?

সঠিক উত্তর: B) ১৮৪৮

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের পর জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে মিলিত হয়ে একটি সর্ব-জার্মান সংসদ বা পার্লামেন্ট গঠন করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল একটি ঐক্যবদ্ধ ও উদারনৈতিক জার্মানির সংবিধান রচনা করা।

প্রশ্ন ১৪২: ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত সময়কে ‘মেটারনিখ যুগ’ বলা হয় কেন?

সঠিক উত্তর: D) কারণ এই সময়ে তিনি তার রক্ষণশীল নীতির মাধ্যমে ইউরোপীয় রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতেন

বিস্তারিত: ভিয়েনা কংগ্রেসের পর থেকে তার পতন পর্যন্ত অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর মেটারনিখ ছিলেন ইউরোপের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রনেতা। তার প্রধান লক্ষ্য ছিল ফরাসি বিপ্লবের আদর্শকে দমন করে ইউরোপে পুরাতন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা। তার এই প্রভাবের কারণেই এই সময়কাল ‘মেটারনিখ যুগ’ নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ১৪৩: ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের সাফল্যের অন্যতম প্রধান কারণ কী?

সঠিক উত্তর: A) বিশাল ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য থেকে কাঁচামাল ও বাজারের জোগান

বিস্তারিত: ব্রিটেনের বিশাল ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য (বিশেষ করে ভারত) তাকে একদিকে যেমন সস্তায় কাঁচামাল (যেমন তুলা) সরবরাহ করত, তেমনই অন্যদিকে তার কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের জন্য একটি নিশ্চিত ও একচেটিয়া বাজার প্রদান করত। এই সুবিধা অন্য কোনো দেশের ছিল না।

প্রশ্ন ১৪৪: বিসমার্কের বৈদেশিক নীতির মূল লক্ষ্য কী ছিল?

সঠিক উত্তর: C) ফ্রান্সকে একঘরে করে রাখা এবং ইউরোপে শান্তি বজায় রাখা

বিস্তারিত: জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ হওয়ার পর (১৮৭১) বিসমার্কের প্রধান লক্ষ্য ছিল নবগঠিত জার্মান সাম্রাজ্যকে সুরক্ষিত করা। তিনি মনে করতেন ফ্রান্স সবসময় সেডানের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চাইবে। তাই তিনি জটিল চুক্তিব্যবস্থার মাধ্যমে ফ্রান্সকে মিত্রহীন করে রাখতে এবং ইউরোপে বড় ধরনের যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে চেয়েছিলেন।

প্রশ্ন ১৪৫: ‘উদ্বৃত্ত মূল্য’ (Surplus Value) তত্ত্বটি কে প্রদান করেন?

সঠিক উত্তর: B) কার্ল মার্কস

বিস্তারিত: মার্কসের মতে, একজন শ্রমিক তার শ্রম দিয়ে যে পরিমাণ মূল্য তৈরি করে এবং সে তার মজুরি হিসেবে যা পায়, এই দুয়ের মধ্যে যে পার্থক্য থাকে, সেটিই হল উদ্বৃত্ত মূল্য। এই উদ্বৃত্ত মূল্যই হল পুঁজিপতির মুনাফার উৎস এবং শোষণের মূল ভিত্তি।

প্রশ্ন ১৪৬: কাভুর কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন?

সঠিক উত্তর: D) পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া

বিস্তারিত: কাউন্ট ক্যামিলো বেনসো ডি কাভুর ১৮৫২ সাল থেকে তার মৃত্যু পর্যন্ত (১৮৬১) পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার নেতৃত্বেই এই রাজ্যটি ইতালির ঐক্য আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্ন ১৪৭: সেডানের যুদ্ধ কত সালে হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) ১৮৭০

বিস্তারিত: ১৮৭০ সালের ১-২ সেপ্টেম্বর ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের সময় সেডানের নির্ণায়ক যুদ্ধটি সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে প্রাশিয়ার কাছে ফ্রান্সের শোচনীয় পরাজয় ঘটে, যা জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ করে এবং ফ্রান্সে দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটায়।

প্রশ্ন ১৪৮: ভিয়েনা কংগ্রেসে ‘শক্তিসাম্য নীতি’ (Balance of Power) প্রয়োগের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?

সঠিক উত্তর: C) ভবিষ্যতে ফ্রান্স বা অন্য কোনো দেশ যাতে একা ইউরোপকে পদানত করতে না পারে তা নিশ্চিত করা

বিস্তারিত: নেপোলিয়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভিয়েনা কংগ্রেসের নেতারা চেয়েছিলেন ইউরোপে শক্তির এমন একটি ভারসাম্য তৈরি করতে, যেখানে কোনো একটি দেশ এককভাবে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে অন্য দেশগুলির স্বাধীনতা বিপন্ন করতে পারবে না।

প্রশ্ন ১৪৯: কোন ইংরেজ সংস্কারক শ্রমিক ও শিশুদের কাজের পরিবেশ উন্নয়নের জন্য আইন পাসের দাবি জানান?

সঠিক উত্তর: B) লর্ড শ্যাফটসবারি

বিস্তারিত: আর্ল অফ শ্যাফটসবারি ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক এবং রাজনীতিবিদ যিনি উনিশ শতকে ব্রিটেনের কারখানাগুলিতে নারী ও শিশুদের কাজের সময় কমানো এবং কাজের পরিবেশ উন্নত করার জন্য ফ্যাক্টরি আইন (Factory Acts) পাসের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

প্রশ্ন ১৫০: ১৮৪৮ সালে ইতালিতে বিদ্রোহের সূচনা হয় কোথা থেকে?

সঠিক উত্তর: D) সিসিলি

বিস্তারিত: সমগ্র ইউরোপে ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের প্রথম স্ফুলিঙ্গটি জ্বলেছিল ইতালির সিসিলি দ্বীপে, ১৮৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে। সেখানকার পালেরমো শহরের জনগণ বুরবোঁ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, যা দ্রুত সমগ্র ইতালিতে এবং পরে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রশ্ন ১৫১: বিসমার্ক কোন জার্মান রাজার চ্যান্সেলর ছিলেন?

সঠিক উত্তর: C) প্রথম উইলিয়াম

বিস্তারিত: অটো ফন বিসমার্ক ১৮৬২ সালে প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়ামের দ্বারা চ্যান্সেলর বা প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তাদের দুজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই জার্মানির ঐক্য সম্ভব হয়েছিল এবং পরে প্রথম উইলিয়াম ঐক্যবদ্ধ জার্মানির কাইজার হন।

প্রশ্ন ১৫২: ‘প্যারিস কমিউন’ কোন যুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: B) ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধ

বিস্তারিত: ১৮৭০-৭১ সালের ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধে ফ্রান্সের পরাজয় এবং তৃতীয় নেপোলিয়নের পতনের পর যে রাজনৈতিক শূন্যতা ও অস্থিরতা তৈরি হয়, তার মধ্যেই ১৮৭১ সালের মার্চ মাসে প্যারিসের বিপ্লবী জনগণ ‘প্যারিস কমিউন’ প্রতিষ্ঠা করে।

প্রশ্ন ১৫৩: শিল্প বিপ্লবের সময় ইংল্যান্ডে জনসংখ্যা দ্রুত কোথায় কেন্দ্রীভূত হচ্ছিল?

সঠিক উত্তর: D) নতুন শিল্প শহরগুলিতে

বিস্তারিত: ‘এনক্লোজার মুভমেন্ট’-এর ফলে ভূমিহীন কৃষক এবং কারখানায় কাজের সন্ধানে আসা মানুষেরা গ্রাম ছেড়ে ম্যানচেস্টার, লিভারপুল, বার্মিংহামের মতো নতুন শিল্প শহরগুলিতে ভিড় জমাতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটি ‘নগরায়ন’ বা Urbanization নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ১৫৪: ‘তরুণ ইউরোপ’ (Young Europe) কে প্রতিষ্ঠা করেন?

সঠিক উত্তর: A) জোসেফ ম্যাৎসিনি

বিস্তারিত: ‘তরুণ ইতালি’র সাফল্যের পর, ম্যাৎসিনি সমগ্র ইউরোপের যুবকদের মধ্যে বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী ভাবধারা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ১৮৩৪ সালে সুইজারল্যান্ডে ‘তরুণ ইউরোপ’ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রশ্ন ১৫৫: ১৮৩০ সালের বিপ্লবের পর ফ্রান্সে কোন ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়?

সঠিক উত্তর: C) সাংবিধানিক রাজতন্ত্র

বিস্তারিত: জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী রাজা দশম চার্লসকে সরিয়ে অর্লিয়েন্স বংশের লুই ফিলিপকে ক্ষমতায় আনা হয়। তার শাসন একটি সংবিধান দ্বারা সীমিত ছিল এবং তিনি পার্লামেন্টের কাছে দায়বদ্ধ ছিলেন, তাই এটি একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র ছিল, যদিও ভোটাধিকার অত্যন্ত সীমিত ছিল।

প্রশ্ন ১৫৬: “ইতিহাস হল শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস” – এটি কোন গ্রন্থের মূল বক্তব্য?

সঠিক উত্তর: B) কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো

বিস্তারিত: কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের লেখা ‘কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’ এই বিখ্যাত উক্তি দিয়ে শুরু হয়: “The history of all hitherto existing society is the history of class struggles.” (আজ পর্যন্ত বিদ্যমান সমস্ত সমাজের ইতিহাস হল শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস)।

প্রশ্ন ১৫৭: জোলভেরাইনের নেতৃত্বে কোন রাজ্য ছিল?

সঠিক উত্তর: D) প্রাশিয়া

বিস্তারিত: ১৮৩৪ সালে প্রাশিয়ার উদ্যোগে এবং নেতৃত্বে এই শুল্ক সংঘটি গঠিত হয়েছিল। অস্ট্রিয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে এর বাইরে রাখা হয়েছিল, যা ছিল জার্মান রাজ্যগুলির উপর থেকে অস্ট্রিয়ার প্রভাব কমানোর একটি বিসমার্কীয় কৌশল।

প্রশ্ন ১৫৮: উনিশ শতকের ইউরোপে শিল্পায়নের একটি বড় সামাজিক প্রভাব কী ছিল?

সঠিক উত্তর: A) মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান

বিস্তারিত: শিল্পায়ন এবং বাণিজ্যের প্রসারের ফলে একটি নতুন, শক্তিশালী ও শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বা বুর্জোয়া শ্রেণির (শিল্পপতি, ব্যাংকার, আইনজীবী, ডাক্তার, প্রকৌশলী) উদ্ভব হয়। এই শ্রেণিটি উনিশ শতকের উদারনৈতিক এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল।

প্রশ্ন ১৫৯: ১৮৪৮ সালে অস্ট্রিয়ার সম্রাট কে ছিলেন, যিনি বিপ্লবের চাপে মেটারনিখকে বরখাস্ত করেন?

সঠিক উত্তর: C) ফার্দিনান্দ প্রথম

বিস্তারিত: অস্ট্রিয়ার দুর্বলমনা সম্রাট ফার্দিনান্দ প্রথম ভিয়েনায় গণবিক্ষোভের চাপে তার দীর্ঘদিনের চ্যান্সেলর মেটারনিখকে পদচ্যুত করতে বাধ্য হয়েছিলেন। পরে বিপ্লব আরও বাড়লে, ফার্দিনান্দ নিজেও পদত্যাগ করেন এবং তার ভাইপো ফ্রান্সিস জোসেফ সম্রাট হন।

প্রশ্ন ১৬০: কোন চুক্তির ফলে ঐক্যবদ্ধ জার্মান সাম্রাজ্যের জন্ম হয়?

সঠিক উত্তর: B) ফ্রাঙ্কফুর্টের চুক্তি

বিস্তারিত: ১৮৭১ সালের মে মাসে স্বাক্ষরিত ফ্রাঙ্কফুর্টের চুক্তি ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটায়। এই চুক্তির মাধ্যমে ফ্রান্স জার্মানিকে আলসেস ও লোরেইন প্রদেশ দুটি হস্তান্তর করে এবং বিপুল পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়। এই যুদ্ধের ফলেই জার্মান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

প্রশ্ন ১৬১: ওয়াটারলু যুদ্ধ কত সালে হয়?

সঠিক উত্তর: D) ১৮১৫

বিস্তারিত: ১৮১৫ সালের ১৮ জুন বেলজিয়ামের ওয়াটারলু নামক স্থানে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের সাথে ডিউক অফ ওয়েলিংটনের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ ও ফিল্ড মার্শাল ব্লুচারের নেতৃত্বাধীন প্রুশিয়ান বাহিনীর চূড়ান্ত যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে নেপোলিয়নের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে, যা ভিয়েনা কংগ্রেসের সিদ্ধান্তকে সুনিশ্চিত করে।

প্রশ্ন ১৬২: ‘রক্ত ও লৌহ’ নীতি প্রথম কে প্রয়োগ করেন?

সঠিক উত্তর: C) বিসমার্ক

বিস্তারিত: প্রুশিয়ান পার্লামেন্টে এক ভাষণে বিসমার্ক ঘোষণা করেন যে, “দিনের বড় প্রশ্নগুলির সমাধান বক্তৃতা বা সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্ত দ্বারা হয় না… বরং রক্ত ও লৌহ দ্বারা হয়”। এই নীতি অনুসরণ করে তিনি যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন।

প্রশ্ন ১৬৩: কোন ঘটনার পর ‘মেটারনিখ তন্ত্রের’ পতন হয়?

সঠিক উত্তর: A) ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লব

বিস্তারিত: ফ্রান্সের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ঢেউ যখন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় আছড়ে পড়ে, তখন গণবিক্ষোভের মুখে চ্যান্সেলর মেটারনিখ পদত্যাগ করে ইংল্যান্ডে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এই ঘটনাই মেটারনিখ তন্ত্রের বা যুগের অবসান ঘটায়।

প্রশ্ন ১৬৪: কোন দেশটিকে ‘ইউরোপের রুগ্ন পুরুষ’ (Sick Man of Europe) বলা হত?

সঠিক উত্তর: D) অটোমান সাম্রাজ্য (তুরস্ক)

বিস্তারিত: উনিশ শতকে সামরিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া এবং তার অধীনস্থ বলকান জাতিগুলির ক্রমাগত বিদ্রোহের কারণে অটোমান সাম্রাজ্যকে ‘ইউরোপের রুগ্ন পুরুষ’ বলে অভিহিত করা হত।

প্রশ্ন ১৬৫: রেলপথের জনক কাকে বলা হয়?

সঠিক উত্তর: B) জর্জ স্টিফেনসন

বিস্তারিত: জর্জ স্টিফেনসন প্রথম সফল বাষ্পীয় রেলইঞ্জিন ‘দ্য রকেট’ তৈরি করেন এবং বিশ্বের প্রথম পাবলিক রেললাইন (স্টকটন থেকে ডার্লিংটন) নির্মাণ করেন। এই কারণে তাকে ‘রেলপথের জনক’ বলা হয়।

প্রশ্ন ১৬৬: ‘নৈরাজ্যবাদ’ (Anarchism) -এর মূল বক্তব্য কী?

সঠিক উত্তর: A) সমস্ত ধরনের রাষ্ট্রীয় শাসন ও কর্তৃত্বের অবসান

বিস্তারিত: নৈরাজ্যবাদীরা মনে করেন, রাষ্ট্র নিজেই শোষণ ও নিপীড়নের যন্ত্র। তাই তারা বাধ্যতামূলক সব ধরনের শাসন, বিশেষ করে রাষ্ট্রব্যবস্থার বিলোপ সাধন করে ব্যক্তির স্বেচ্ছামূলক সহযোগিতার ভিত্তিতে একটি সমাজ গড়তে চান। প্রুধোঁ, বাকুনিন ছিলেন বিখ্যাত নৈরাজ্যবাদী চিন্তাবিদ।

প্রশ্ন ১৬৭: কোন বিপ্লবের পর বেলজিয়াম স্বাধীনতা লাভ করে?

সঠিক উত্তর: C) জুলাই বিপ্লব (১৮৩০)

বিস্তারিত: ফ্রান্সে ১৮৩০ সালের জুলাই বিপ্লবের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বেলজিয়ামের জনগণ হল্যান্ডের শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

প্রশ্ন ১৬৮: জার্মানি ও ইতালির ঐক্যে কোন বিষয়টি সাধারণ ছিল?

সঠিক উত্তর: D) উভয় ক্ষেত্রেই অস্ট্রিয়া প্রধান বাধা ছিল এবং একটি শক্তিশালী রাজ্য (পিডমন্ট ও প্রাশিয়া) নেতৃত্ব দিয়েছিল

বিস্তারিত: ইতালি ও জার্মানি উভয়কেই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য অস্ট্রিয়ার প্রভাব ও সামরিক শক্তিকে পরাজিত করতে হয়েছিল। ইতালির ক্ষেত্রে পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া এবং জার্মানির ক্ষেত্রে প্রাশিয়া এই নেতৃত্ব প্রদান করেছিল।

প্রশ্ন ১৬৯: ভার্সাই প্রাসাদের ‘মিরর হল’ (Hall of Mirrors) কোন ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী?

সঠিক উত্তর: B) জার্মান সাম্রাজ্যের ঘোষণা

বিস্তারিত: ১৮৭১ সালের ১৮ জানুয়ারি, ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধে ফ্রান্সকে পরাজিত করার পর, বিসমার্ক ফরাসিদের অপমানের চূড়ান্ত নিদর্শন হিসেবে ভার্সাই প্রাসাদের বিখ্যাত ‘মিরর হলে’ প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়ামকে ঐক্যবদ্ধ জার্মানির সম্রাট বা কাইজার হিসেবে ঘোষণা করেন।

প্রশ্ন ১৭০: ‘ডারউইনের বুলডগ’ নামে পরিচিত কোন বিজ্ঞানী সমাজ ও অর্থনীতিতে ডারউইনের তত্ত্ব প্রয়োগের চেষ্টা করেন?

সঠিক উত্তর: A) হার্বার্ট স্পেন্সার

বিস্তারিত: হার্বার্ট স্পেন্সার “সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট” (Survival of the Fittest) বা ‘যোগ্যতমের উদবর্তন’ ধারণাটি তৈরি করেন এবং এটিকে মানব সমাজে প্রয়োগ করে ‘সামাজিক ডারউইনবাদ’ (Social Darwinism) -এর জন্ম দেন। তিনি মনে করতেন, অর্থনীতি ও সমাজে দুর্বলদের সাহায্য করা প্রকৃতির নিয়মের পরিপন্থী।

প্রশ্ন ১৭১: ফ্রান্সে ‘জুলাই রাজতন্ত্র’ (July Monarchy) বলতে কোন সময়কালকে বোঝানো হয়?

সঠিক উত্তর: C) ১৮৩০-১৮৪৮

বিস্তারিত: ১৮৩০ সালের জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে লুই ফিলিপ ক্ষমতায় আসেন। তার এই শাসনকাল ‘জুলাই রাজতন্ত্র’ নামে পরিচিত, যা ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লব পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল।

প্রশ্ন ১৭২: কোন শিল্প শহরকে ‘কালো দেশের শহর’ (City of the Black Country) বলা হত?

সঠিক উত্তর: D) বার্মিংহাম

বিস্তারিত: ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ছিল লৌহশিল্প, কয়লা খনি এবং ভারী শিল্পের কেন্দ্র। কারখানা ও খনির ধোঁয়া ও দূষণে আকাশ ও মাটি কালো হয়ে যেত বলে এই অঞ্চলটিকে ‘ব্ল্যাক কান্ট্রি’ বলা হত।

প্রশ্ন ১৭৩: অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি দ্বৈত রাজতন্ত্র (Dual Monarchy) কবে গঠিত হয়?

সঠিক উত্তর: A) ১৮৬৭

বিস্তারিত: ১৮৬৬ সালে প্রাশিয়ার কাছে পরাজিত হওয়ার পর দুর্বল অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্য তার হাঙ্গেরীয় প্রজাদের সন্তুষ্ট করার জন্য ‘অসগ্লিচ’ (Ausgleich) বা আপোস চুক্তি করে। এর মাধ্যমে অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি দুটি পৃথক সরকার ও সংসদ সহ প্রায় সমান মর্যাদা লাভ করে, যদিও সম্রাট ছিলেন একজনই। এটি অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য নামে পরিচিত হয়।

প্রশ্ন ১৭৪: শার্ল ফুরিয়ে কোন ধরনের সমাজ ব্যবস্থার কথা বলেন?

সঠিক উত্তর: C) ফ্যালানস্টারে (Phalanstère)

বিস্তারিত: কাল্পনিক সমাজতন্ত্রী শার্ল ফুরিয়ে ‘ফ্যালানক্স’ বা ‘ফ্যালানস্টারে’ নামক স্বনির্ভর কৃষি ও শিল্প সমবায়ের ধারণা দেন, যেখানে প্রায় ১৬০০ মানুষ একসঙ্গে বাস করবে এবং নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কাজ করে উৎপাদিত সম্পদ ভাগ করে নেবে।

প্রশ্ন ১৭৫: লাইপজিগের যুদ্ধ বা ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ’ (Battle of Nations) কত সালে হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: B) ১৮১৩

বিস্তারিত: ১৮১৩ সালের অক্টোবরে লাইপজিগে নেপোলিয়নের ফরাসি বাহিনীর সাথে রাশিয়া, প্রাশিয়া, অস্ট্রিয়া ও সুইডেনের সম্মিলিত বাহিনীর এক বিশাল যুদ্ধ হয়। এটি ছিল নেপোলিয়onic যুদ্ধের বৃহত্তম যুদ্ধ এবং এতে নেপোলিয়নের শোচনীয় পরাজয় হয়, যা তার পতনের পথকে ত্বরান্বিত করে।

প্রশ্ন ১৭৬: শিল্প বিপ্লবের আগে উৎপাদন ব্যবস্থা কেমন ছিল?

সঠিক উত্তর: A) কুটির শিল্প বা গার্হস্থ্য উৎপাদন ব্যবস্থা (Domestic System)

বিস্তারিত: শিল্প বিপ্লবের আগে কারিগররা নিজেদের বাড়িতে বা ছোট কর্মশালায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাজ করত। বণিকরা তাদের কাঁচামাল দিত এবং উৎপাদিত পণ্য সংগ্রহ করত। এই ব্যবস্থাকে ‘গার্হস্থ্য উৎপাদন ব্যবস্থা’ বা ‘putting-out system’ বলা হয়।

প্রশ্ন ১৭৭: ‘জার’ কোন দেশের শাসকের উপাধি ছিল?

সঠিক উত্তর: D) রাশিয়া

বিস্তারিত: রোমান ‘সিজার’ থেকে উদ্ভূত ‘জার’ (Tsar বা Czar) ছিল রাশিয়ান সাম্রাজ্যের সম্রাটদের উপাধি।

প্রশ্ন ১৭৮: পিডমন্টের কোন রাজা ১৮৪৮ সালের পর ইতালির একমাত্র সাংবিধানিক শাসক হিসেবে টিকে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: B) দ্বিতীয় ভিক্টর এমানুয়েল

বিস্তারিত: ১৮৪৮ সালের বিপ্লবের ব্যর্থতার পর ইতালির অন্যান্য শাসকরা তাদের সংবিধান প্রত্যাহার করে নিলেও, পিডমন্টের নতুন রাজা দ্বিতীয় ভিক্টর এমানুয়েল তার পিতা চার্লস অ্যালবার্টের দেওয়া সংবিধান (Statuto Albertino) বজায় রাখেন। এই কারণে তিনি ইতালির জাতীয়তাবাদীদের কাছে আশার আলো হয়ে ওঠেন।

প্রশ্ন ১৭৯: বুরবোঁ राजवंश কোন কোন দেশে রাজত্ব করত?

সঠিক উত্তর: C) ফ্রান্স, স্পেন ও নেপলস

বিস্তারিত: বুরবোঁ ছিল ইউরোপের অন্যতম প্রধান রাজবংশ। ভিয়েনা কংগ্রেসের সময় এই বংশের শাসকরা ফ্রান্স, স্পেন এবং দক্ষিণ ইতালির নেপলস ও সিসিলি রাজ্যে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন।

প্রশ্ন ১৮০: জার্মানির কোন দুটি প্রদেশ নিয়ে ডেনমার্কের সাথে প্রাশিয়ার যুদ্ধ হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) শ্লেজউইগ ও হলস্টাইন

বিস্তারিত: এই দুটি প্রদেশের জনসংখ্যা মূলত জার্মান হলেও এগুলি ডেনমার্কের রাজার অধীনে ছিল। ডেনমার্ক এগুলিকে সরাসরি নিজ দেশের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করলে, বিসমার্ক অস্ট্রিয়াকে সাথে নিয়ে ১৮৬৪ সালে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটি ছিল তার ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ।

প্রশ্ন ১৮১: শিল্পায়ন মহাদেশীয় ইউরোপে দেরিতে শুরু হওয়ার কারণ কী?

সঠিক উত্তর: D) রাজনৈতিক অস্থিরতা, ফরাসি বিপ্লব ও নেপোলিয়onic যুদ্ধ

বিস্তারিত: যখন ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব গতি পাচ্ছিল, তখন মহাদেশীয় ইউরোপ ফরাসি বিপ্লব এবং দীর্ঘ নেপোলিয়onic যুদ্ধের কারণে রাজনৈতিকভাবে বিধ্বস্ত ও অস্থিতিশীল ছিল। এই যুদ্ধ এবং রাজনৈতিক বিভাজন মহাদেশে শিল্পায়নকে বহু বছর পিছিয়ে দিয়েছিল।

প্রশ্ন ১৮২: মেটারনিখের মতে ইউরোপের প্রধান দুটি ‘ক্যান্সার’ বা ব্যাধি কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) উদারনীতিবাদ ও জাতীয়তাবাদ

বিস্তারিত: মেটারনিখ বিশ্বাস করতেন যে ফরাসি বিপ্লব থেকে জন্ম নেওয়া উদারনীতিবাদ ও জাতীয়তাবাদের ধারণা দুটি ইউরোপের স্থিতিশীলতা, রাজতন্ত্র এবং অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের মতো বহুজাতিক রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই তিনি এগুলিকে দমন করাকেই তার প্রধান কর্তব্য মনে করতেন।

প্রশ্ন ১৮৩: ‘রিয়েলপলিটিক’ -এর সাথে কোন নেতার নাম যুক্ত?

সঠিক উত্তর: C) কাভুর ও বিসমার্ক

বিস্তারিত: যদিও বিসমার্ক ‘রিয়েলপলিটিক’ -এর শ্রেষ্ঠ উদাহরণ, কাভুরও ইতালির ঐক্যের জন্য আদর্শবাদের পরিবর্তে বাস্তববাদী কূটনীতি, গোপন চুক্তি এবং যুদ্ধের আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাই ম্যাৎসিনির আদর্শবাদের বিপরীতে কাভুর ও বিসমার্ক উভয়কেই রিয়েলপলিটিকের অনুসারী বলা হয়।

প্রশ্ন ১৮৪: প্রথম টেলিগ্রাম লাইন কবে এবং কোথায় স্থাপিত হয়?

সঠিক উত্তর: A) ১৮৪৪, ওয়াশিংটন ডি.সি. ও বাল্টিমোরের মধ্যে

বিস্তারিত: স্যামুয়েল মোর্স -এর আবিষ্কৃত টেলিগ্রাফ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৮৪৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটন ডি.সি. এবং বাল্টিমোরের মধ্যে প্রথম পাবলিক টেলিগ্রাফ লাইন খোলা হয়। এটি যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি বিপ্লব নিয়ে আসে।

প্রশ্ন ১৮৫: উনিশ শতকে জার্মানির শিল্পায়নে কোন দুটি খনিজ সম্পদ প্রধান ভূমিকা পালন করে?

সঠিক উত্তর: D) কয়লা ও লোহা

বিস্তারিত: জার্মানির রুঢ় (Ruhr) উপত্যকায় থাকা বিশাল কয়লা এবং আলসেস-লোরেইন ও অন্যান্য অঞ্চলে থাকা লোহার বিশাল ভান্ডার উনিশ শতকের শেষ দিকে জার্মানির দ্রুত শিল্পায়নের মূল ভিত্তি ছিল।

প্রশ্ন ১৮৬: উনিশ শতকে কোন শহরকে ‘বিশ্বের অর্থনৈতিক রাজধানী’ বলা হত?

সঠিক উত্তর: C) লন্ডন

বিস্তারিত: শিল্প বিপ্লব এবং বিশাল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কারণে উনিশ শতকে লন্ডন ছিল বিশ্বের প্রধান বাণিজ্যিক, আর্থিক এবং বীমার কেন্দ্র। ‘পাউন্ড স্টার্লিং’ ছিল বিশ্বের প্রধান মুদ্রা এবং ‘ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড’ ছিল আন্তর্জাতিক অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক।

প্রশ্ন ১৮৭: ‘ডুয়েল অফ দ্য ফেইটস’ (Duel of the Fates) নামে পরিচিত রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাদের মধ্যে ছিল?

সঠিক উত্তর: A) বিসমার্ক ও তৃতীয় নেপোলিয়ন

বিস্তারিত: ১৮৬০-এর দশকে ইউরোপের প্রধান দুই নেতা, প্রাশিয়ার বাস্তববাদী চ্যান্সেলর বিসমার্ক এবং ফ্রান্সের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের মধ্যেকার কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে প্রায়শই এই নামে অভিহিত করা হয়, যার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটেছিল ১৮৭০ সালের সেডানের যুদ্ধে।

প্রশ্ন ১৮৮: উনিশ শতকের জাতীয়তাবাদ এবং বিশ শতকের জাতীয়তাবাদের মধ্যে মূল পার্থক্য কী?

সঠিক উত্তর: D) উনিশ শতকের জাতীয়তাবাদ ছিল মূলত মুক্তি ও ঐক্যের জন্য (উদারনৈতিক), কিন্তু বিশ শতকে তা আগ্রাসী ও সাম্রাজ্যবাদী রূপ নেয়

বিস্তারিত: উনিশ শতকে জাতীয়তাবাদ বিদেশি শাসন থেকে মুক্তি (যেমন গ্রিস, ইতালি) এবং বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ (যেমন জার্মানি) করার একটি প্রগতিশীল শক্তি ছিল। কিন্তু শতাব্দীর শেষে এবং বিশ শতকের শুরুতে এই জাতীয়তাবাদ উগ্র, বর্ণবাদী এবং আগ্রাসী রূপ নেয়, যা সাম্রাজ্যবাদ ও বিশ্বযুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

প্রশ্ন ১৮৯: কোন ঘটনার মাধ্যমে রোম ইতালির রাজধানী হয়?

সঠিক উত্তর: C) ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের সুযোগে ইতালীয় বাহিনীর রোম দখলের মাধ্যমে

বিস্তারিত: পোপের রাজ্য রোম ফরাসি সৈন্যদের দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। ১৮৭০ সালে ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধ শুরু হলে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন রোম থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। এই সুযোগে ইতালির সেনাবাহিনী রোম দখল করে এবং এর মাধ্যমে ইতালির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়।

প্রশ্ন ১৯০: ১৮৪৮ সালের বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার একটি প্রধান কারণ কী ছিল?

সঠিক উত্তর: B) বিপ্লবীদের মধ্যে বিভেদ (উদারপন্থী ও সমাজতন্ত্রীদের মধ্যে)

বিস্তারিত: বিপ্লব শুরু হওয়ার পর বিপ্লবীদের মধ্যকার শ্রেণি ও আদর্শগত বিভেদ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মধ্যবিত্ত উদারপন্থীরা শুধুমাত্র রাজনৈতিক সংস্কার চাইত, কিন্তু শ্রমিক ও সমাজতন্ত্রীরা সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন চাইত। এই বিভেদ পুরাতন শক্তিগুলিকে পুনরায় ক্ষমতা দখলের সুযোগ করে দেয় (যেমন ফ্রান্সের জুন বিদ্রোহ)।

প্রশ্ন ১৯১: ‘Mazzini, Cavour, Garibaldi: Three Who Made Italy’—এই বিখ্যাত বইটি কার লেখা?

সঠিক উত্তর: A) ডেনিস ম্যাক স্মিথ

বিস্তারিত: ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ডেনিস ম্যাক স্মিথ ইতালির রিসর্জিমেন্টো বা ঐক্য আন্দোলনের উপর একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তার এই বিখ্যাত গ্রন্থটি ঐক্য আন্দোলনের তিন প্রধান পুরুষের ভূমিকা বিশ্লেষণ করে।

প্রশ্ন ১৯২: ‘কনটিনেন্টাল সিস্টেম’ বা মহাদেশীয় অবরোধ কে চালু করেন?

সঠিক উত্তর: D) নেপোলিয়ন বোনাপার্ট

বিস্তারিত: ১৮০৬ সালে নেপোলিয়ন ব্রিটেনের বিরুদ্ধে এই অর্থনৈতিক অবরোধ চালু করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল মহাদেশীয় ইউরোপের কোনো দেশকে ব্রিটেনের সাথে বাণিজ্য করতে না দিয়ে ব্রিটেনের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়া। এই ব্যবস্থা ব্যর্থ হয় এবং এটি নেপোলিয়নের পতনের অন্যতম কারণ ছিল।

প্রশ্ন ১৯৩: কোন চুক্তির মাধ্যমে গ্রিস স্বাধীনতা লাভ করে?

সঠিক উত্তর: C) কনস্টান্টিনোপল চুক্তি (১৮৩২) বা লন্ডন প্রোটোকল

বিস্তারিত: গ্রিসের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং রাশিয়ার হস্তক্ষেপে অটোমান সাম্রাজ্য ১৮৩২ সালে কনস্টান্টিনোপল চুক্তিতে স্বাক্ষর করে গ্রিসের পূর্ণ স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।

প্রশ্ন ১৯৪: জার্মানি ও ইতালির ঐক্যের সময় পোপ কে ছিলেন?

সঠিক উত্তর: B) নবম পায়াস (Pius IX)

বিস্তারিত: পোপ নবম পায়াসের শাসনকাল (১৮৪৬-১৮৭৮) ছিল অত্যন্ত দীর্ঘ। তিনি ইতালির ঐক্য এবং উদারনীতিবাদের ঘোর বিরোধী ছিলেন। ১৮৭০ সালে ইতালীয় বাহিনী রোম দখল করলে তিনি নিজেকে ‘ভ্যাটিকানের বন্দী’ বলে ঘোষণা করেন।

প্রশ্ন ১৯৫: ‘পিটারলু হত্যাকাণ্ড’ (Peterloo Massacre) কোথায় হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) ম্যানচেস্টার, ইংল্যান্ড

বিস্তারিত: ১৮১৯ সালে ম্যানচেস্টারের সেন্ট পিটার্স ফিল্ডে সংসদীয় সংস্কারের দাবিতে আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ জনসমাবেশের উপর সরকারি বাহিনী আক্রমণ চালালে বহু মানুষ হতাহত হন। ওয়াটারলুর যুদ্ধের ব্যঙ্গাত্মক অনুকরণে এই ঘটনাকে ‘পিটারলু হত্যাকাণ্ড’ বলা হয়।

প্রশ্ন ১৯৬: ‘ডুমা’ কোন দেশের আইনসভার নাম?

সঠিক উত্তর: D) রাশিয়া

বিস্তারিত: যদিও এই প্রশ্নটি উল্লিখিত সময়কালের কিছুটা বাইরে, ‘ডুমা’ হল রাশিয়ান সাম্রাজ্যের আইনসভা, যা ১৯০৫ সালের বিপ্লবের পর জার দ্বিতীয় নিকোলাস প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হন।

প্রশ্ন ১৯৭: উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে কোন দুটি দেশ শিল্পায়নে ব্রিটেনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে শুরু করে?

সঠিক উত্তর: C) জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

বিস্তারিত: ১৮৭০ সালের পর থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের সময় জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ, ইস্পাত এবং রাসায়নিক শিল্পে দ্রুত উন্নতি করে এবং শতাব্দীর শেষে শিল্প উৎপাদনে ব্রিটেনকে পেছনে ফেলতে শুরু করে।

প্রশ্ন ১৯৮: ‘স্যাভয়’ ও ‘নিস’ অঞ্চল দুটি কাভুর কোন দেশকে দিয়েছিলেন?

সঠিক উত্তর: B) ফ্রান্স

বিস্তারিত: প্লোমবিয়ার্সের চুক্তি অনুযায়ী, অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামরিক সাহায্যের বিনিময়ে পিডমন্টের প্রধানমন্ত্রী কাভুর ফরাসিভাষী অঞ্চল স্যাভয় এবং গ্যারিবল্ডির জন্মস্থান নিস ফ্রান্সের সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নকে হস্তান্তর করেন।

প্রশ্ন ১৯৯: ১৮১৫ সালের পর ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্র নির্ধারণে

প্রশ্ন ১৯৯: ১৮১৫ সালের পর ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্র নির্ধারণে কোন নীতিটিকে সবচেয়ে বেশি উপেক্ষা করা হয়েছিল?

সঠিক উত্তর: A) জাতীয়তাবাদী নীতি

বিস্তারিত: ভিয়েনা কংগ্রেসের নেতারা জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বা জাতীয়তাবাদী আকাঙ্ক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছিলেন। তারা ইতালীয়, জার্মান, পোলিশ, বেলজিয়ানদের মতো জাতিদের ভাগ্য নির্ধারণ করেছিলেন শুধুমাত্র বৃহৎ শক্তিগুলির স্বার্থ এবং শক্তিসাম্য রক্ষার জন্য, যা পরবর্তীকালে অসংখ্য বিদ্রোহ ও যুদ্ধের কারণ হয়।

প্রশ্ন ২০০: সামগ্রিকভাবে, ১৮১৫ থেকে ১৮৭১ সাল পর্যন্ত ইউরোপের ইতিহাসকে কীসের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখা যেতে পারে?

সঠিক উত্তর: D) ভিয়েনা কংগ্রেসের রক্ষণশীল ব্যবস্থা এবং জাতীয়তাবাদ ও উদারনীতিবাদের শক্তির মধ্যে

বিস্তারিত: এই সময়কালের মূল চালিকাশক্তি ছিল এই দুটি বিপরীতমুখী শক্তির সংঘাত। একদিকে ছিল মেটারনিখের নেতৃত্বে ভিয়েনা কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠিত রক্ষণশীল, পুরাতনপন্থী ব্যবস্থা, যা রাজতন্ত্র ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চেয়েছিল। অন্যদিকে ছিল ফরাসি বিপ্লব থেকে উদ্ভূত উদারনীতিবাদ ও জাতীয়তাবাদের নতুন ও শক্তিশালী ভাবাদর্শ, যা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সাংবিধানিক সরকার এবং জাতি-রাষ্ট্রের দাবি তুলেছিল। ১৮৩০ ও ১৮৪৮-এর বিপ্লব এবং জার্মানি ও ইতালির ঐক্য ছিল এই দ্বন্দ্বে নতুন শক্তিগুলির চূড়ান্ত বিজয়।

Leave a Comment

Scroll to Top